বাঁ দিক থেকে প্রহ্লাদ জোশী, সনিয়া গান্ধী এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেত্রী সনিয়া গান্ধী বুধবার সকালে চিঠি লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সন্ধ্যায় সেই চিঠির ‘জবাবে’ মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। জানালেন, আগামী ১৮-২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশনের কোনও আলোচ্যসূচি স্থির করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি, সনিয়ার দলের বিরুদ্ধে সংসদের কার্যক্রমকে রাজনীতিকরণ করা এবং অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন প্রহ্লাদ।
প্রসঙ্গত, ‘ইন্ডিয়া বনাম ভারত’ বিতর্কের আবহে সংসদের আসন্ন বিশেষ অধিবেশনে ন’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি দিয়েছেন সনিয়া। বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার জন্য সময় বরাদ্দের আবেদন জানানোর পাশাপাশি সরকারকে নিশানা করে চিঠিতে বলা হয়েছে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা না করে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এর ফলে সংসদে কোন বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে, সে বিষয়ে বিরোধী দলগুলি অন্ধকারে বলেও চিঠিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সনিয়ার প্রস্তাবিত ন’টি বিষয়ের মধ্যে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধি, কৃষকদের সমস্যা, জাতগণনা, হরিয়ানার মতো কয়েকটি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হওয়া, মণিপুরে গোষ্ঠীহিংসা, এমনকি আদানি-বিতর্কও।
সনিয়ার চিঠি সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে প্রহ্লাদ বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় হল যে আপনি আমাদের গণতন্ত্রের মন্দির সংসদের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। এবং এ বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন।’’ জোশীর দাবি, রাষ্ট্রপতি অধিবেশন ডাকার পর এবং অধিবেশন শুরুর আগে সব দলের নেতাদের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে সমস্যা এবং আলোচ্য বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়। বৈঠক ডাকার আগে বিরোধীদের সঙ্গে অধিবেশনের আলোচ্য নিয়ে বৈঠক করার রেওয়াজ সংসদীয় গণতন্ত্রে নেই।
সংসদের বিশেষ অধিবেশনে কেন্দ্র কী করতে চলেছে, সেটা আঁচ করে কৌশল ঠিক করতে মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাসভবনে ইন্ডিয়া-র দলগুলি বৈঠকে বসেছিল। পরে কংগ্রেসের লোকসভার উপনেতা গৌরব গগৈ বলেন, ‘‘বিশেষ অধিবেশন কেন ডাকা হল তা নিয়ে সরকারের তরফে কোনও কথা বলা হয়নি। আমাদের দাবি, বিশেষ অধিবেশনের কর্মসূচি কী, তা জানানো হোক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা দেশের মূল সমস্যাগুলির সমাধানে ইতিবাচক অধিবেশন চাই।’’ গগৈয়ের দাবি, ইন্ডিয়া-র দলগুলির ঐক্য দেখে কাঁপছে বিজেপি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘‘সংসদের বিশেষ অধিবেশনে সরকারের কর্মসূচি কী, তা গোপন রাখা হচ্ছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা হওয়ার কথা নয়।’’