পয়লা জানুয়ারি থেকে খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা ৮০ কোটির বেশি মানুষকে নিখরচায় রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। প্রতীকী ছবি।
আমজনতা নিখরচায় রেশন পাবেন ঠিকই। তবে নিখরচায় রেশন দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের কত ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হবে আমজনতাকে।
নতুন বছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা ৮০ কোটির বেশি মানুষকে নিখরচায় রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। তা নিয়ে ঢাক পেটানোতেও সরকার কোনও কসুর করছে না। রেশন দোকানে গিয়ে পাঁচ কেজি চাল বা গম নিলে যে বিল ধরানো হবে, তাতে গ্রাহকের পাওনা শূন্য লেখা থাকবে। কিন্তু ওই চাল বা গম নিখরচায় দিতে গিয়ে সরকারকে কত ভর্তুকি গুনতে হল, তা-ও বিলে লেখা থাকবে। একই সঙ্গে কেন্দ্রই যে পুরো খরচ দিয়ে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে, তা নিয়ে ব্যাপক প্রচারে যাওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে মোদী সরকার। প্রতিটি রেশন দোকানের বাইরে লেখা থাকবে, কেন্দ্র কতখানি রেশন বিনামূল্যে দিচ্ছে। রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার অ্যাসেসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু আজ কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন সচিব সঞ্জীব চোপড়াকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছেন, যে চাল-গম তাঁদের কাছে রয়ে যাচ্ছে, তার কী হবে?
এর আগে প্রবীণ নাগরিকদের কম দামে রেলের টিকিট দেওয়ার সময়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, টিকিটের পিছনে ভর্তুকির অঙ্ক লেখা থাকবে। লেখা হয়েছিল, ‘আপনি কি জানেন, আপনার টিকিটের ৪৩% খরচ করদাতারা বহন করছেন?’ এ নিয়ে প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভও তৈরি হয়। এখন রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কার্যত উঠে গেলেও ভর্তুকি দেওয়ার সময়ে খরচের পরিমাণ গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করে জানানো হয়েছে, সিলিন্ডার পিছু সরকার কত টাকা ভর্তুকি দিল। বিনামূল্যে রেশন বিলি করেও মোদী সরকার ভর্তুকির অঙ্ক জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এত দিন খাদ্য সুরক্ষা আইনে ৮১.৩৫ কোটি মানুষকে ভর্তুকি দিয়ে সামান্য দামে চাল-গম বিলি করা হত। চালের জন্য দিতে হত কেজি প্রতি ৩ টাকা, গমের জন্য ২ টাকা। বাকিটা ভর্তুকি দিত কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য বাকিটাও ভর্তুকি দিয়ে নিখরচায় রেশনের বন্দোবস্ত করত। অন্য অনেক রাজ্য কিছুটা চাল-গম ভর্তুকি দিয়ে কম দামে রেশন দিত। কেউ আবার বাড়তি চাল-গম বা অন্য পণ্য রেশনে দিত। এ বার কেন্দ্র নিখরচায় রেশনের সম্পূর্ণ খরচ দিয়ে পুরো কৃতিত্বও চাইছে। তাই রেশন ডিলারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাজ্য সরকার বাড়তি পণ্য দিলে তার জন্য আলাদা করে বায়োমেট্রিক যাচাই করতে হবে। কেন্দ্র কী দিচ্ছে আর রাজ্য কী দিচ্ছে, তা স্পষ্ট বোঝানো যাবে।