Infantry Combat Vehicle

লাদাখে চিনকে ‘গোল দিতে’ মোদীকে ‘স্ট্রাইকার’ দিচ্ছেন ট্রাম্প, প্রথম তৈরি হবে আমেরিকার বাইরে

আমেরিকার দেওয়া স্ট্রাইকারের সৌজন্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাহিনী গত তিন বছর ধরে রুশ সেনাকে ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০০

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আমেরিকার দেওয়া ওই অস্ত্রের সৌজন্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির বাহিনী গত তিন বছর ধরে রুশ সেনাকে ঠেকিয়ে রাখতে পেরেছে বলে মনে করেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকে। এ বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌজন্যে যুদ্ধযান (ইনফ্র্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্‌) স্ট্রাইকার পেতে চলেছে ভারতীয় সেনা। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

স্ট্রাইকার হাতে পেলে লাদাখ উপত্যকার চিনা পিপল্‌স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র মোকাবিলার ভারতীয় সেনা অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যাবে। ইউক্রেনের বরফ ঢাকা, অসমতল, পাহাড়ি প্রান্তরে আমেরিকার এই যুদ্ধযান তার কার্যকারিতার প্রমাণ দিয়েছে ইতিমধ্যেই। বস্তুত, লাদাখে সম্ভাব্য চিনা হামলা ঠেকাতে হালকা ট্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল চার বছর আগেই। ২০২০-র অগস্টে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৌজের হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরে।

সে সময় সম্ভাব্য চিনা হামলার আশঙ্কায় দ্রুত ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়’ (এলএসি) সেনা মোতায়েন করার সময় খামতি ধরা পড়ে হালকা ট্যাঙ্কের ক্ষেত্রে। কারণ, ডিআরডিও-র তৈরি ‘অর্জুন’, রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়) ওজনে ভারী হওয়ায় লাদাখের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধের উপযুক্ত নয়। ফলে চিনা হালকা ট্যাঙ্ক জ়েডটিকিউ-১৫-র মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাকে ভরসা করতে হয়েছিল আশির দশকে রাশিয়া থেকে আনা বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিক্‌ল’ (সাঁজোয়া গাড়ি)-এর উপর।

চার দশকের পুরনো রুশ বিএমপির বদলে স্ট্রাইকার সাঁজোয়া গাড়ি এ ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর। স্ট্রাইকারে বসানো ১০৫ মিলিমিটারের এম-৬৮ ইউক্রেনের যুদ্ধে একাধিক বার পরাস্ত করেছে রুশ টি-৭২ ট্যাঙ্ককে! স্ট্রাইকারের অস্ত্রভান্ডারে রয়েছে ৫০ মিলিমিটারের এম-২ ব্রাউনিং ভারী মেশিনগান, এমকে-১৯ গ্রেনেড লঞ্চার এবং এম-২৪০ মিডিয়ম মেশিনগান। যা পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে কার্যকরী হবে বলে অনুমান সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

ইউক্রেন-সহ কয়েকটি দেশকে সরবরাহ করলেও এই প্রথম বার উত্তর আমেরিকা মহাদেশের বাইরে যৌথ উদ্যোগে এই ইনফ্র্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল্‌ নির্মিত হবে। আমেরিকা-কানাডার যৌথ সংস্থা ‘জেনারেল ডায়নামিক্স ল্যান্ড সিস্টেমস’ বরাবরই গোপন রাখতে চেয়েছে স্ট্রাইকারের প্রযুক্তি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রায় দু’দশক আগে ভারতের সঙ্গে স্ট্রাইকার নিয়ে এক দফা আলোচনা হলেও প্রযুক্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত মতবিরোধের বিষয়টি আটকে গিয়েছিল। এ বার ট্রাম্পের সৌজন্যে ভারতই হতে চলেছে প্রথম ব্যতিক্রম।

প্রসঙ্গত, লাদাখ-সহ এলএসির বিভিন্ন প্রান্তে চিনকে ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান অনুসরণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিআরডিও-কে হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বছর তিনেক আগেই। তাদের সহযোগী হয়েছে এল অ্যান্ড টি। দেশীয় প্রযুক্তিতে হালকা ট্যাঙ্ক ‘জ়োরাবর’-এর কয়েক দফা পরীক্ষাও হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। সূত্রের খবর, সেই পরীক্ষাগুলির ফল ‘সন্তোষজনক’। লাদাখের পাশাপাশি গুজরাতের হজ়িরায় ‘এল অ্যান্ড টি হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সহযোগিতায় হয়েছে জ়োরাবরের ‘ট্র্যাক ট্রায়াল’ (ট্যাঙ্ক বহনকারী ইস্পাতের চেনের সক্ষমতার পরীক্ষা)।

Advertisement
আরও পড়ুন