গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির সঙ্গে শেখ হাসিনার জমানায় নিষিদ্ধ ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)-র সংঘাত কার্যত প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। উপলক্ষ, জাতীয় সংসদের পরবর্তী নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা।
রাজধানীর ঢাকায় নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বৃহস্পতিবার জামায়াত নেতারা জানিয়ে এসেছেন, ভোট প্রক্রিয়ায় জরুরি সংস্কারগুলি সম্পন্ন না করে তাঁরা জাতীয় সংসদের নির্বাচন আয়োজনের পক্ষপাতী নন। বৈঠক শেষে জামায়াতের মহাসচিব মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে সব প্রতিষ্ঠান জড়িত, সেগুলিরও সংস্কার করে নির্বাচনে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে জামায়াতের তরফে নির্বাচন কমিশনকে ভোটের কোনও দিন, মাস, ক্ষণ বেঁধে দেওয়া হয়নি।’’
পরওয়ারের বক্তব্যেই স্পষ্ট, ভোট নিয়ে তাঁরা ধীরে চলো নীতির পক্ষপাতী। যদিও দ্রুত জাতীয় সংসদের নির্বাচন চেয়ে বিএনপি ক্রমশ মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। সরকারের একাংশ পরিকল্পিত ভাবে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও খালেদার দলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর আগে গত মাসে ইউনূসের ডাকা বৈঠকেও দু’দলের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল।
বিএনপি ওই বৈঠকে দাবি করেছিল, গত জুলাই-অগস্টের ‘গণঅভ্যুত্থানের’ পাশাপাশি হাসিনার শেষ ১৬ বছরে তাদের যত নেতা-কর্মী খুন বা গুম হয়েছেন, সকলের নাম শহিদের তালিকায় তুলতে হবে। বিএনপি সরকার-বিরোধী যে সব আন্দোলন করেছে, সেগুলির উল্লেখও হাসিনা-উচ্ছেদের সময়পঞ্জিতে রাখতে হবে। অন্য দিকে, জামায়াতে দাবি করেছিল, একাত্তরে গণহত্যার দায়ে তাদের যে সব নেতাকে আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচার করে ফাঁসি দিয়েছে, তাঁদের নামও জুলাই-শহিদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি সেই দাবি মানতে রাজি হয়নি।