(বাঁ দিকে) মোনালিসার বাড়ি। ভাইরাল মালা বিক্রেতা মোনালিসা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়ির দেওয়ালে ঠিক মতো পলেস্তারাও পড়েনি। দেওয়ালের ইটের উপরে সাদা রং পড়লেও তা যে অনেক দিনের, চেহারায় একেবারে স্পষ্ট। টানা একটি ঘর। ছাদ বলতে কালো পলিথিনে ঢাকা ছাউনি। দারিদ্রের ছাপ বাড়ির প্রতি কোনায় কোনায় ধরা পড়ছে। কিন্তু গত কয়েক দিনেই এই বাড়িটি যেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রদেশের মহেশ্বরে।
হবে না-ই বা কেন! বাড়িতে দারিদ্রের ছাপ স্পষ্ট থাকলেও, এই বাড়ির বাসিন্দা যিনি, তিনিই তো এখন সারা দেশে ভাইরাল। তাঁকে নিয়ে বিস্তর চর্চা। সুন্দর চোখের জন্য গোটা দেশে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তিনি। এই বাড়ির বাসিন্দা আর কেউ নন, মোনালিসা। উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল মালা বিক্রি করতে। তার পরই কোনও এক নেটপ্রভাবীর ক্যামেরায় বন্দি তাঁর মোহময় নীল চোখ। সেটি সমাজমাধ্যমে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল। তার পর থেকেই মোহময় চোখের পিছনে ধাওয়া করে বেড়িয়েছেন নেটপ্রভাবীরা। মালা বিক্রি লাটে উঠে গিয়েছিল তাঁর।
পেটের টানে মালা বিক্রি করতে এসে তাঁর সৌন্দর্য ‘হরণ’ হওয়ায় শেষমেশ কুম্ভমেলা ছাড়তে হয় মোনালিসাকে। আদতে রাজস্থানের চিতৌরগড়ের বাসিন্দা মোনালিসা। কিন্তু ৩০ বছর আগে তাঁর পরিবার মধ্যপ্রদেশের মহেশ্বরে এসে পাকাপাকি ভাবে থাকা শুরু করেন। বিভিন্ন মেলা এবং ঘুরে ঘুরে মোনালিসারা মালা বিক্রি করে সংসার চালান। মোনালিসারা চার ভাইবোন। বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি মোনালিসা। তাঁর কাকিমা বলেন, ‘‘চার ভাইবোন নিয়ে খুব কষ্টে দিন চলে মোনালিসাদের। মাথার উপর ছাদ থাকলেও তা কখন ভেঙে পড়বে তার নিশ্চয়তা নেই। সরকার যদি ওদের একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়, তা হলে পাকাপাকি ভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।’’