ত্রিপুরার রাজ্যপাল সত্যদেও নারায়ণ আর্য এবং মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: পিটিআই।
অবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মানিক সাহার নাম ঘোষণা করল বিজেপি। সোমবার আগরতলায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়কদের বৈঠকে ‘সর্বসম্মত ভাবে’ তাঁর নাম চূড়ান্ত হয়।
বিজেপি পরিষদীয় দলের বৈঠকের পরে সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্যপাল সত্যদেও নারায়ণ আর্যের সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকার গড়ার দাবি জানান মানিক। সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, বুধবার আগরতলায় স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে নয়া সরকারের শপথগ্রহণ হবে। সেই কর্মসূচিতে হাজির থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে ইতিমধ্যেই মঞ্চ বাঁধার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির নেতৃত্বাধীন ‘নেডা’ (নর্থ-ইস্ট ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) জোটের আহ্বায়ক হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সম্বিত পাত্র ত্রিপুরার নবনির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে অধিকাংশ বিধায়কই বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিককে আবার কুর্সিতে চেয়েছিলেন বলে দলের একটি সূত্রের খবর। যদিও মানিকের নাম তখন চূড়ান্ত হয়নি। সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর নাম চূড়ান্ত হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ বারের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কাউকে তুলে ধরেনি বিজেপি। বরং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিককে বিধানসভা ভোটে দাঁড় করিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছিল। প্রাক্তন সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বিধানসভা কেন্দ্র ছিনিয়ে এনে এ বার নতুন সমীকরণের সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছিলেন প্রতিমা। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রিত্ব না পেলেও তিনি মানিক মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি এ বার ৫৫টিতে লড়ে ৩২টি আসনে জিতেছে। সহযোগী আইপিএফটি ৬টিতে লড়ে জিতেছে ১টিতে। বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছে প্রায় ৩৯ শতাংশ ভোট। সঙ্গী আইপিএফটি এ বার ভোট পেয়েছে মাত্র ১.২ শতাংশ। বাম-কংগ্রেস জোট প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৪টি আসনে জিতেছে। আর এক বিরোধী দল তিপ্রা মথা প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৩টি আসনে জিতেছে।
২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটেও কোনও ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ ঘোষণা করেনি বিজেপি। ভোটের পর বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রথম বার বিধানসভায় নির্বাচিত বিপ্লব দেবকে। কিন্তু গত বছর মে মাসে তাঁকে সরিয়ে আগরতলার কুর্সি দেওয়া হয় পেশায় দন্তচিকিৎসক মানিককে। এর পর গত বছর জুন মাসের উপনির্বাচনে আগরতলার টাউন বড়দোয়ালি কেন্দ্র থেকে জিতে আসেন তিনি। এ বারও ওই কেন্দ্র থেকে মানিক প্রায় ১,২০০ ভোটে জিতেছেন।