— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মঙ্গলবার গভীর রাতে মণিপুরের চুড়াচাঁদপুরের লেইসাংয়ের কাছে আততায়ীর গুলিতে নিহত হলেন সশস্ত্র কুকি দলের এক স্বঘোষিত কমান্ডার। ভোরে তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য চুড়াচাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই কমান্ডারের উপর হামলা হয়। তিনি কাপরাং গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। গ্রামে ‘সেখহোহাও’ নামে ডাকা হত তাঁকে। ইউনাইটেড কুকি ন্যাশনাল আর্মির সদস্য ছিলেন সেখহোহাও। বুধবার ভোরে চুড়াচাঁদপুররে তোরবুং বাংলোর অদূরেই তাঁর দেহ পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, মণিপুরে মঙ্গলবার থেকেই আরও ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)-এর মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম এবং লামফেল-সহ ১৯টি থানা এলাকা ছাড়া গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিছু বিক্ষুব্ধ এবং কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর হিংসাত্মক কার্যকলাপ মোকাবিলা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।
সম্প্রতি কংপোকপি এবং পশ্চিম ইম্ফলের দু’টি জায়গায় ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে মণিপুরের মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পর গত ৬ সেপ্টেম্বর বিষ্ণুপুর জেলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেরেম্বাম কোইরেংয়ের বাড়িতে রকেট হামলা হয়। তার পর দফায় দফায় হামলা চলেছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন এলাকা থেকে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশ ও সেনার যৌথ অভিযানে সাড়ে ২৮ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয় পূর্ব ইম্ফল জেলায়। তার মাঝেই মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ দাবি করেন, জঙ্গলযুদ্ধ এবং ড্রোন হামলায় প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি জঙ্গি মায়ানমার থেকে মণিপুরে প্রবেশ করেছে। গোয়েন্দা সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। মণিপুরের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, মণিপুরের পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে। আলোচনা চলছে কুকি ও মেইতেই দু’পক্ষের সঙ্গে। অন্য দিকে, মণিপুর কংগ্রেসের দাবি, রাজ্যে হিংসা, অশান্তি চলছেই। কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে আলোচনা চলারও কোনও প্রমাণ নেই।