Rajasthan Child Rescue Operation

যন্ত্রকে ফের হারালেন র‌্যাট হোল খননকারীরা, তবে সরকারের টনক আগে নড়লে এই পরিণতি হত না

সরকারি দস্তাবেজে ‘নিষিদ্ধ’ সেই র‌্যাট হোল খননকারীরা ১৩ মাসের মাথায় প্রমাণ করলেন নিজেদের অসাধারণত্ব। কিন্তু শেষ পরিণতি আনন্দের হল না।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫২

আমেরিকার সাহিত্যিক এলবার্ট হুবার্ড লিখেছিলেন, ‘একটি যন্ত্র ৫০ জন সাধারণ মানুষের কাজ করে দিতে পারে, কিন্তু কোনও যন্ত্রই এক জন অসাধারণ বিকল্প হতে পারে না’! সরকারি দস্তাবেজে ‘নিষিদ্ধ’ সেই র‌্যাট হোল খননকারীরা ১৩ মাসের মাথায় প্রমাণ করলেন নিজেদের অসাধারণত্ব। কিন্তু শেষ পরিণতি আনন্দের হল না।

Advertisement

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সিল্কিওয়ারা সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধারের পরে রাজস্থানের কোটওয়ালে খোলা-মুখ কুয়োর ১৭০ ফুট গভীরে আটকে থাকা তিন বছরের শিশুকন্যা চেতনাকেও জীবিত অবস্থাতেই বাইরে বার করে এনেছিলেন ‘র‌্যাট হোল মাইনার্স’রা। কিন্তু পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হল। চেতনা কুয়োয় পড়ার এক সপ্তাহ পরে গত সোমবার কাজ শুরু করেছিলেন র‌্যাট হোল খননকারীরা। তাঁদের আগেই ডাকা হলে রাজস্থানের শিশুকন্যাও প্রাণে বেঁচে যেত বলে অভিযোগ।

প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র ‘পাইলিং মেশিন’, ‘আমব্রেলা বেস’, ‘অগার মেশিন’, ‘জে হুক প্রযুক্তি’র অকার্যকারিতে সামনে আসার পরেও কেন সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যর্থ হল ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’? উত্তরাখণ্ডে ১৭ দিন ধরে আটক শ্রমিকদের সকলকে জীবিত উদ্ধারে সাফল্য পেয়েছিলেন খননকারীরা। ১০ দিন পর চেতনাকে জীবিত উদ্ধার করা গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে তার মৃত্যু হল।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, উত্তরাখণ্ডের সিল্কিওয়ারা সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিককে সময়মতো খাবার এবং জলের জোগান দেওয়া গিয়েছিল। সেই সুড়ঙ্গের পরিসরও ছিল অনেক বিস্তৃত। অন্য দিকে, ৭০০ ফুট গভীর সঙ্কীর্ণ কুয়োর ১৭০ ফুট গভীরে আটকে থাকা মাত্র তিন বছরের শিশুকন্যার কাছে ১০ দিন ধরে কিছুই পৌঁছনো যায়নি। সেই সঙ্গে ভারী বৃষ্টির ফলে জল চুঁইতে শুরু করেছিল কুয়োয়। ভিজে অবস্থায় কোনও চিকিৎসাও পায়নি চেতনা। দুর্ঘটনার গোড়াতেই র‌্যাট হোল খননকারীদের সাহায্য নিলে এমনটা হত না বলে স্থানীয়দের একাংশের দাবি।

কয়লাখনিতে অতি ক্ষুদ্র কিছু গর্ত খুঁড়ে কয়লা উত্তোলন করার প্রক্রিয়াকে ‘র‌্যাট-হোল মাইনিং’ বলে। এই পদ্ধতিতে বেলচা, কোদাল, কুড়ুলের মতো মান্ধাতার আমলের সরঞ্জামের সাহায্যে ইঁদুরের মতো সঙ্কীর্ণ সুড়ঙ্গ খুঁড়ে শ্রমিকেরা পৌঁছে যান কয়লার স্তরের পাশে। যার পোশাকি নাম ‘সাইড কাটিং’। এক দশক আগে এই খনন প্রক্রিয়াকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছিল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি)। কিন্তু আবার দেখা গেল ‘উন্নত প্রযুক্তি’ এবং ‘আধুনিক বিদেশি যন্ত্রপাতি’ শেষ পর্যায়ে মুখ থুবড়ে পড়ার পরে অগতির গতি সেই ‘র‌্যাট হোল মাইনিং’ই।

Advertisement
আরও পড়ুন