Chhattisgarh Journalist Murder

১২০ কোটির ‘দুর্নীতি’ ফাঁস করেছিলেন! ছত্তীসগঢ়ে সাংবাদিকের মৃতদেহ সেই ঠিকাদারেরই বাড়ির ট্যাঙ্কে

মুকেশের দাদার দাবি, ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতির খবর করার পর থেকেই লাগাতার হুমকিবার্তা পাচ্ছিলেন। আর সেই হুমকি আসছিল ঠিকাদার সুরেশ এবং আরও তিন জনের কাছ থেকে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:০২
ছত্তীসগঢ়ে সাংবাদিক খুন। ছবি: সংগৃহীত।

ছত্তীসগঢ়ে সাংবাদিক খুন। ছবি: সংগৃহীত।

ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে এক সাংবাদিকের দেহ উদ্ধার হল। দু’দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। মৃতের নাম মুকেশ চন্দ্রকর (২৮)। গত ১ জানুয়ারি নিখোঁজ হয়ে যান মুকেশ। ৩ জানুয়ারি বস্তারে এক ঠিকাদারের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, একটি সর্বভারতীয় সাংবাদমাধ্যমে কাজ করতেন মুকেশ। বস্তারে ১২০ কোটি টাকার রাস্তা প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে বেশ কয়েকটি খবরও করেন তিনি। এই প্রকল্পে কী ভাবে দুর্নীতি হচ্ছে, দুর্নীতির মাথা কে, তা নিয়ে একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে আনেন। দুর্নীতিতে নাম উঠে আসে ঠিকাদার সুরেশ চন্দ্রশেখরের। দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসতেই ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয় প্রশাসন।

বিজাপুরের সাংবাদিক ছিলেন মুকেশ। তাঁর দাদা যুকেশ চন্দ্রকরও সাংবাদিক। মুকেশ নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগপত্রে ঠিকাদার সুরেশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঠিকাদারের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হয় সাংবাদিকের দেহ। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, তাঁকে খুন করে সেপটিক ট্যাঙ্কের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মুকেশের দাদার দাবি, ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতির খবর করার পর থেকেই লাগাতার হুমকিবার্তা পাচ্ছিলেন। আর সেই হুমকি আসছিল ঠিকাদার সুরেশ এবং আরও তিন জনের কাছ থেকে।

বিজাপুরের পুলিশ সুপার জিতেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, মুকেশের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মোবাইলের অবস্থান চিহ্নিত করে ঠিকাদার সুরেশের বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মুকেশের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মূলত যে জায়গা থেকে সাংবাদিকের দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে ঠিকাদারের কর্মীরা থাকেন। সেই সব কর্মী এবং ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, সাম্প্রতিক কোনও খবরের সঙ্গে মুকেশের মৃত্যুর যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

‘বস্তার জংশন’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালাতেন মুকেশ। বস্তারের নানা রকম খবর তুলে ধরতেন ওই চ্যানেলের মাধ্যমে। দেড় লক্ষ গ্রাহক মুকেশের ইউটিউব চ্যানেলের। প্রাথমিক তদন্তের পরই পুলিশ ঠিকাদার সুরেশকে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করে। রীতেশ নামে আরও এক জনকেও ধরা হয়েছে। এ ছাড়াও মুকেশের দেহ লোপাটে সাহায্য করার জন্য ঠিকাদারের এক কর্মীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঠিকাদার সুরেশের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে বস্তারে। সরকারি টেন্ডার পাওয়ার জন্য অর্থ এবং লোকবল প্রয়োগ করতেও পিছপা হন না। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পান না। এমনই প্রভাব ঠিকাদারের। যে সব সাংবাদিক তাঁর দুর্নীতির বিষয় ধরে ফেলেছিলেন, তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা এবং প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

Advertisement
আরও পড়ুন