গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
‘রংবাজি’কাণ্ডের জেরে বিরোধীদের বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় মুলতুবি হল লোকসভা এবং রাজ্যসভার অধিবেশন। সাসপেন্ড হয়েছেন দুই কক্ষের ১৫ জন বিরোধী সাংসদ। এই পরিস্থিতিতে সংসদের সুরক্ষা নিয়ে মন্ত্রিসভার বেশ কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আলোচনা করেছেন বলে সরকারি সূত্রের খবর। পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার সকালে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গেও আলোচনা করেন তিনি।
গত ২৮ মে বিপুল সমারোহে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেপ্টেম্বরে গণেশ চতুর্থী তিথিতে অধিবেশন শুরু হয়েছিল নতুন ভবনে। কিন্তু তার তিন মাসের মধ্যেই সুরক্ষার গুরুতর গাফিলতি দেখা গেল সেখানে। বুধবার তিন স্তরের সুরক্ষা বলয় টপকে কী ভাবে চার বিক্ষোভকারী গ্যাস-ক্যানিস্টার নিয়ে ভবনের সংরক্ষিত এলাকায় পৌঁছে গেলেন, এমনকি তাঁদের মধ্যে দু’জন লোকসভার অধিবেশনে ঢুকে দর্শক আসন থেকে ফ্লোরে ঝাঁপ মারার সুযোগ পেলেন, তা নিয়ে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সরব হন বিরোধীরা জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করে সংসদের দু’কক্ষেই ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলেন বিরোধী সাংসদেরা। বিক্ষোভ সামাল দিতে রাজ্যসভার অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড় শীতকালীন অধিবেশনের বাকি দিনগুলির জন্য সাসপেন্ড করেন তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। লোকসভায় সাসপেন্ড করা হয় ১৪ সাংসদকে। তাঁদের মধ্যে কংগ্রেসের ন’জন, সিপিএমের দু’জন, ডিএমকের দু’জন এবং সিপিআইয়ের এক সাংসদ রয়েছেন। আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের বর্তমান শীতকালীন অধিবেশন চলার কথা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে সাসপেনশনের ‘অস্ত্রে’ যে বিরোধীদের বিক্ষোভ ধামাচাপা দেওয়া যাবে না তা বুঝতে পেরে সক্রিয় হয়েছে সরকার পক্ষ।
বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বিরোধীদের চাপের মুখে ‘রণকৌশল’ স্থির করার বিষয়ে পরামর্শ করেছেন মোদী। ঘটনাচক্রে, বুধবার লোকসভার অধিবেশন কক্ষে ঝাঁপ মেরে ‘রংবাজি’ ছোড়া দুই যুবক, সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি কর্নাটকের মাইসুরুর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিংহের দেওয়া সুপারিশপত্রের জেরেই সংসদ ভবনে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন। বসতে পেরেছিলেন লোকসভার দর্শক আসনে। রাজনৈতিক ভাবে এই ঘটনাও বিজেপির উপর চাপ বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ওই সূত্রের খবর, বৈঠকে সংসদের সুরক্ষার মতো গুরুতর বিষয়ে চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।