Wayanad Landslide

ওয়েনাড়ে মৃতের সংখ্যা তিনশো ছাড়িয়েছে, এখনও নিখোঁজ তিনশোর বেশি, পর্যুদস্ত গ্রামে চলছে লুটপাট!

বিধ্বস্ত ওয়েনাড়ে চলছে উদ্ধারকাজ। মৃতের সংখ্যা তিনশো ছাড়িয়েছে। এখনও নিখোঁজ শতাধিক মানুষ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৫১
বিপর্যস্ত ওয়েনাড়।

বিপর্যস্ত ওয়েনাড়। ছবি: পিটিআই।

ভূমিধসে প্রায় নিশ্চিহ্ন গোটা গ্রাম। ধসে পড়েছে একের পর এক ঘর। ভাগ্যক্রমে এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে যে গুটি কয়েক বাড়ি, তাতেও চলছে লুটপাট। অন্তত এমনটাই অভিযোগ ওয়েনাড়ের বেঁচে যাওয়া বাসিন্দাদের।

Advertisement

মঙ্গলবার ভোরবেলায় ধস নেমেছিল। তার পর থেকে ধস-বিধ্বস্ত কেরলের এই জনপদে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। মৃতের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে তিনশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই বলছে, সরকারি হিসাবে ৩০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমর্থিত সূত্রে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি, অন্তত ৩৪০। কেরল পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি শুক্রবার জানিয়েছেন, প্রায় ৩০০ মানুষ এখনও নিখোঁজ। ৩৪৮টি বাড়ি পুরো নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের পাশাপাশি উদ্ধার অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনীও।

তার মধ্যেও কয়েকটি বাড়ি অল্পের জন্য ধসের থেকে বেঁচে গিয়েছে, কিন্তু চুরির হাত থেকে রেহাই পায়নি। এমনই এক জন জানাচ্ছেন, ভূমিধসের ভোরে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন, ঘর থাকলেও আসবাবপত্র কিছুই অবশিষ্ট নেই। প্রাণে বেঁচে গেলেও তাঁর গলায় হতাশার সুর, ‘‘ভূমিধসের সময় বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পলিয়েছিলাম। পরে যখন ঘরবাড়ি কিছু অবশিষ্ট রয়েছে কি না দেখতে ফিরে আসি, দেখি ঘরের দরজা ভাঙা। চুরি গিয়েছে মালপত্রও।’’ ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেকেই বলছেন একই কথা। তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমরা এই ক’দিনে সব কিছু হারালাম!’’

স্থানীয় সূত্র বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে এই দুঃসময়েও পুরোদমে চলছে লুটপাট। বাড়ির দরজা ভেঙে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসন, আসবাবপত্র। এমনকি বাদ যাচ্ছে না জামাকাপড়ও! পরিস্থিতি এমনই যে বিধ্বস্ত এলাকায় রাতের টহল বাড়িয়েছে পুলিশ। কেউ চুরির উদ্দেশ্য নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করলে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। পুলিশ সূত্রে খবর, চুরি আটকাতে শনিবার রাত থেক‌েই টহল বাড়ানো হয়েছে চুড়ালমালা এবং মুন্ডাক্কাই-সহ কয়েকটি এলাকায়। রাত্রিবেলা পুলিশের অনুমতি ছাড়া কাউকে উদ্ধার অভিযানের নামে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

এ সবে অবশ্য থেমে নেই উদ্ধার অভিযান। উদ্ধারকারীদের ৪০টি দল উদ্ধারকাজ শুরু করেছে, যা এখনও চলছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উদ্ধারে নেমেছেন স্থানীয়েরাও। এ ছাড়াও রয়েছে কিছু বেসরকারি উদ্ধারকারী দলও। চূড়ালমালাতে উদ্ধারকাজে আরও গতি আনার জন্য বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই অস্থায়ী সেতু বানিয়েছে সেনা। মুন্ডাক্কাই এবং পুঞ্জিরিমাত্তম গ্রামে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। ধসকবলিত মুন্ডাক্কাই এবং চূড়ালমালাকে মোট ছ’টি অঞ্চলে ভাগ করে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওয়েনাড়ের জেলাশাসক মেঘাশ্রী ডি আর। প্রথমে আত্তামালা এবং আরানমালা, দ্বিতীয় মুন্ডাক্কাই, তৃতীয় পুঞ্চিরিমাত্তম, চতুর্থ ভেলারিমালা গ্রাম, পঞ্চম জিভিএইচএএস ভেলারিমালা এবং শেষে নদীর পারগুলিতে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।

Advertisement
আরও পড়ুন