মনজাম্মা জোগাতি। ছবি: সংগৃহীত।
একে গ্রামের রক্ষণশীল যৌথ পরিবারের সন্তান। তার উপর ‘মেয়েলি পুরুষ’। ছোটবেলা থেকেই তাই বারে বারে নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছিল মনজাম্মা জোগাতিকে।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে মঙ্গলবার পদ্মশ্রী সম্মাননা গ্রহণের পরে কর্নাটকের রূপন্তরকামী লোকশিল্পী নিজেই জানিয়েছেন তাঁর জীবনের সেই সব লাঞ্ছনার দিনগুলির কথা।
বল্লারীর অদূরে এক গ্রামে জন্ম মনজাম্মার। তখন নাম ছিল মঞ্জুনাথ শেট্টি। সে সময় থেকেই নিজের নারীসত্তাকে চিনতে পেরেছিলেন তিনি। সম্ভবত চিনতে পেরেছিল আরও কেউ কেউ। তাই শৈশবেই এক আত্মীয়ের যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছিল। মানসিক অবসাদে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
#WATCH | Transgender folk dancer of Jogamma heritage and the first transwoman President of Karnataka Janapada Academy, Matha B Manjamma Jogati receives the Padma Shri award from President Ram Nath Kovind. pic.twitter.com/SNzp9aFkre
— ANI (@ANI) November 9, 2021
বুধবার মনজাম্মান বলেন, ‘‘সে সময় বেশ কিছু দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। কিন্তু পরিবার-পরিজনেদের কেউই আমাকে দেখতে যাননি। এমনকি, নিজের আর তুতো মিলিয়ে জনা কুড়ি ভাইবোনের মধ্যেও কেউ যায়নি।’’
রুপান্তরকামী হওয়ার ‘অপরাধে’ মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হয়েছিল মনজাম্মাকে। সে সময় কিছু দিন পেটের দায়ে রাস্তায় ভিক্ষাও করেছেন তিনি। এরপর এক আত্মীয়ের সহায়তার হসপেটের হুলিজায়াম্মা মন্দিরে ঠাঁই পেয়েছিলেন তিনি। অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন জোগাপ্পা সমাজের। সেখানেই তাঁর প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটে। জনপদ সংগীত এবং জোগনৃত্যে পারদর্শিতার কারণে পান পরিচিতি এবং স্বীকৃতি।
বি এস ইয়েদুরাপ্পার মুখ্যমন্ত্রিত্বের সময়ে কর্নাটক জনপদ অ্যাকাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন মনজাম্মা। রাজ্য এবং জাতীয় স্তরের নানা পুরস্কারও পেয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু এখনও পুরনো যন্ত্রণার স্মৃতি মাঝেমধ্যেই নাড়া দিয়ে যায় তাঁর মনে। বুধবার তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমার মতো মানসিক গঠনের শিশুদের প্রতি পরিবারের আরও একটু সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। উপেক্ষা তাদের প্রাপ্য নয়।’’