এস জয়শঙ্কর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাংলাদেশে চলতি ডামাডোলের আবহেই মঙ্গলবার সকালে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সংসদে বৈঠকটি শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বৈঠকে সব দলের প্রতিনিধিদের সামনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আরও একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সংসদেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন জয়শঙ্কর।
তৃণমূলের তরফে সর্বদল বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে সুদীপ বলেন, “বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের অবস্থান সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলব। বিরোধের কোনও জায়গা নেই৷” বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্র পরবর্তী পদক্ষেপ করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই বিষয়ে অবহিত করার আর্জি জানান তিনি।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সোমবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র, ‘র’-এর প্রধান রবি সিন্হা এবং গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি)-র ডিরেক্টর তপন ডেকা।
গণবিক্ষোভের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে ভারতে আসেন। গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণের পর সোমবার সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল গিয়ে সাক্ষাৎ করেন হাসিনার সঙ্গে। হাসিনার দেশত্যাগের পরে তাঁর সরকারি বাসস্থান ‘গণভবন’, সংসদ ভবন, তাঁর দল আওয়ামী লীগের ছোট-বড় দফতরের পাশাপাশি হামলার শিকার হয়েছে ঢাকায় ইন্দিরা গান্ধীর নামাঙ্কিত ‘ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। বুলডোজ়ার এনে ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি!
অশান্তির এই আবহে নতুন করে বাংলাদেশের নাগরিকদের একাংশের মধ্যে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার প্রবণতা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সদ্যপ্রাক্তন শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি এই তালিকায় সে দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীও থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।