সকালেই রাজধানীর একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লম্বা লাইন। ছবি— পিটিআই।
ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে গেল দিল্লি পুর নিগমে (এমসিডি)। চলবে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। টানা চতুর্থ বার পুর নিগম দখলে রাখতে পারবে কি বিজেপি, না কি প্রথম বারের জন্য ‘আম আদমি’র দলকেই পুর নিগম দেখভালের জন্য বেছে নেবেন রাজধানীর জনতা— জবাব মিলবে ইভিএমে।
দিল্লি পুর নিগমের মহাগুরুত্বপূর্ণ ভোটে ২৫০টি ওয়ার্ডে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ১,৩৪৯ জন। ভোটদাতা ১ কোটি ৪৫ লক্ষের বেশি। কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি এবং দিল্লির শাসক আপ— সব ওয়ার্ডেই লড়াই মূলত দ্বিমুখী। তবে আছেন কংগ্রেসের প্রার্থীরাও। বেশ কিছু ওয়ার্ডে পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন কিছু নির্দল প্রার্থীও।
দিল্লি পুরনিগমের ভোটে গত ১৫ বছর ধরে রমরমা বিজেপির। কিন্তু বিধানসভা ভোটে দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে বেশির ভাগ দখল করেছে আপ। অথচ আপ কখনও দিল্লি পুরনিগম দখল করতে পারেনি। গত এমসিডি ভোটে মোট ২৭২টি ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ১৮১টিতে। আপ পেয়েছিল ৪৮ এবং কংগ্রেস ২৭টি ওয়ার্ড। তাই লড়াই এ বার সেয়ানে সেয়ানে।
আপের মুখ্য আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লিবাসীর উদ্দেশে একটি সৎ এবং দায়িত্বনিষ্ঠ পুরনিগম গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত এবং পরিচ্ছন্ন দিল্লির পক্ষে থাকুন। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে আপ প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করুন।’’
দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘‘দেড় দশকে দিল্লি আবর্জনার পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় এলে দিল্লিকে স্বচ্ছ বানানোই হবে প্রধান লক্ষ্য।’’ কার্যত বিজেপির ধাঁচেই দিল্লি সরকার ও দিল্লি পুরনিগমে আপের ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের পক্ষে সওয়াল করেছেন আপ নেতারা।
অন্য দিকে, বিজেপি হাতিয়ার করতে চাইছে দুর্নীতিকে। দুর্নীতির অভিযোগে আপের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের তিহাড় জেলে বন্দি থাকা, জেলে অবৈধ ভাবে সুবিধা নেওয়ার একের পর এক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসা, উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়ার বিরুদ্ধে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ দিল্লিবাসী ভাল ভাবে নেয়নি বলেই দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেন, ‘‘স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আবগারি, পরিবহণ, এমনকি ঠিকা শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে দুর্নীতির একটি নতুন মডেল খাড়া করেছে কেজরীওয়াল সরকার। মানুষ পুর নিগমের ভোটে এর বদলা নেবেন।’’
এ দিকে নির্বাচন উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার বেড়াজালে মুড়ে ফেলা হয়েছে দিল্লি পুর এলাকাকে। ভোটের দিন রাস্তায় থাকবেন ৪০ হাজার দিল্লি পুলিশকর্মী। পাশাপাশি ২০ হাজার হোমগার্ড এবং ১০৮টি কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন থাকছে। সব মিলিয়ে, রবিবারের দিল্লি যেন এক কথায় দুর্গে পরিণত হয়েছে।