প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
৩০ বছর আগে এক দিন আচমকাই কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৫০। পরিবারের লোক বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনও লাভ হয়নি। সন্ধান পাওয়া যায়নি তাঁর। তিন দশক পর ‘নিখোঁজ’ সেই মহিলার সঙ্গে দেখা হল তাঁর পরিবারের! মানসিক এবং শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও পরিবারের লোককে চিনতে পেরেছেন তিনি। তাঁদের সঙ্গে নিজের বাড়ি ফিরে যেতেও আপত্তি করেননি মহারাষ্ট্রের অহমেদনগর জেলার বাসিন্দা বছর আশির ওই বৃদ্ধা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০ বছর আগে একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ওই মহিলার ১৩ বছরের পুত্রের। প্রাণের চেয়ে প্রিয় পুত্রকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ভেঙে পড়েছিলেন মানসিক ভাবেও। তার পর এক দিন হঠাৎ কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান ওই মহিলা।
বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে নাসিকে গিয়ে পৌঁছন তিনি। কয়েক বছর নাসিকের পঞ্চবটী এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। স্থানীয়েরাই খবর দেন পুলিশকে। বছর দুই আগে পুলিশ বুঝতে পারে, ওই মহিলার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। তাঁর কী নাম, বাড়ি কোথায়, কোনও কিছুই জানাতে পারেননি। পুলিশ ওই মহিলাকে ঠাণের এক মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করায়। দু’বছর চিকিৎসার পর সাড়া দেন তিনি। আস্তে আস্তে কিছুটা স্মৃতি ফিরে আসে তাঁর। ওই হাসপাতালের সুপার নেতাজি মুলিক জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে মানসিক ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন বৃদ্ধা। তার পরই শুরু হয় তাঁর পরিবারের খোঁজ।
হাসপাতালের সুপারের কথায়, ‘‘বিষয়টা খুবই চাপের ছিল। কারণ, ওই মহিলার অতীতের কোনও কথাই মনে ছিল না। তবে চিকিৎসকদের চিকিৎসায় সাড়া দেন তিনি। শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার উন্নতি হওয়ার পর তাঁর অসংলগ্ন কিছু কথা থেকে পরিবার সম্পর্কে জানতে পারি আমরা।’’ জানা যায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে অহমেদনগরের বাসিন্দা তিনি। তার পরই অহমেদনগরের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ খোঁজ নিয়ে ওই মহিলার পরিবারকে বিষয়টি জানান। গত ১৭ জানুয়ারি মহিলার পরিবারের সদস্যেরা এসে তাঁর সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করেন। পরে তাঁকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান।