সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে এ বার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি কর-কাণ্ডে শাস্তিপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে এ বার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হল সিবিআই-ও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্রের দাবি, দিল্লির সদর দফতরের সিদ্ধান্তমতো বুধবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার শিয়ালদহ আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে। এর পরে সোমবার বিচারক অনির্বাণ দাস তাঁকে আমরণ কারাবাসের শাস্তি শোনান। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই দিনই জানিয়ে দেন, দোষীর ফাঁসির শাস্তি চেয়ে রাজ্য সরকার হাই কোর্টে আবেদন জানাবে। সেই মতো মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে যায় রাজ্য। বুধবার তার শুনানি ছিল। সেই আবহেই সিবিআই-ও সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে উচ্চ আদালতে গেল।
রাজ্য যে উচ্চ আদালতে গেল, তা তারা আদৌ করতে পারে কি না, তা নিয়ে আদালতেই প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। আইনজীবীদের একাংশের মতে, নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্যের যে আবেদন জমা পড়েছে হাই কোর্টে, তাতে সিবিআই-ই প্রথম পক্ষ হতে চাইছে বলেই এই পদক্ষেপ।
গত সোমবার সঞ্জয়কে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাস এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলে মনে করেননি বলেও জানিয়েছেন। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলেই মনে করছেন। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যাওয়ার কথাও বলেছিলেন। সেই মতো মঙ্গলবার মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় আদালত। বুধবার তার শুনানিতেই সিবিআই জানায়, দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাজ্য কী ভাবে আবেদন করতে পারে। ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল (সিবিআই আইনজীবী) রাজদীপ মজুমদারের বক্তব্য, সিবিআইও এই মামলায় দোষী সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ শাস্তিই চেয়েছিল। এই মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল সিবিআই। সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতার পরিবার, সিবিআই কিংবা দোষী হাই কোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কী ভাবে এই আবেদন করতে পারে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল। সিবিআইয়ের আইনজীবীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী (পিপি) দেবাশিস রায়।
তার কয়েক ঘণ্টা পরে সিবিআই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দফতর থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)