ছত্রপতি শিবাজির সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর তুলনা করায় মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের উপর ক্ষুব্ধ শিন্ডে শিবির। ফাইল চিত্র।
ইস্তফা দিতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘বার্তা’ পাঠিয়েছেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারি। সোমবার টুইট-বার্তায় কোশিয়ারি নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক মুম্বই সফরে আমি তাঁর কাছে সমস্ত রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছি। জানিয়েছি, বাকি জীবনটা আমি পড়া, লেখা এবং অন্য কাজে ব্যয় করতে চাই।”
গত কয়েক মাস ধরেই জল্পনা ছিল, শিবাজি-বিতর্কে বিজেপির সহযোগী শিন্ডেসেনা এবং বিরোধীদের চাপে কোশিয়ারিকে ইস্তফা দিতে বলবে কেন্দ্র। বিজেপির একটি সূত্র জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের দাবি মেনেই রাজ্যপাল পদ ছাড়ার বার্তা পাঠানো হয়েছে কোশিয়ারিকে।
During the recent visit of the Hon'ble Prime Minister to Mumbai, I have conveyed to him my desire to be discharged of all political responsibilities and to spend the remainder of my life in reading, writing and other activities.
— Governor of Maharashtra (@maha_governor) January 23, 2023
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে অওরঙ্গাবাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বরেণ্য মরাঠা ব্যক্তিত্বদের উদাহরণ দিতে গিয়ে কোশিয়ারি বলেছিলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে বৈগ্রহিক চরিত্রের অভাব নেই। প্রাচীন যুগে ছিলেন ছত্রপতি শিবাজি। পরবর্তী সময়ে ভীমরাও অম্বেডকর। বর্তমান সময়ে নিতিন গডকরী।’’
ওই মন্তব্যের পরেই বিরোধী শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে শিবির)-র তরফে মরাঠা ভাবাবেগে আঘাত করার জন্য রাজ্যপালের ইস্তফা দাবি করা হয়। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ একই দাবি তোলে বিজেপির সহযোগী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা গোষ্ঠীও। শিন্ডেসেনার প্রথম সারির নেতা তথা বিধায়ক সঞ্জয় গায়কোয়াড় বলেন, ‘‘অম্বেডকর এবং নিতিনের সঙ্গে এক আসনে বসিয়ে মরাঠা জাতির আরাধ্য শিবাজি মহারাজের অবমাননা করছেন রাজ্যপাল।’’
তার আগে গত অগস্টে একটি কর্মসূচিতে রাজ্যপাল কোশিয়ারি বলেছিলেন, ‘‘গুজরাতি এবং রাজস্থানিরা চলে গেলে মুম্বই আর দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী থাকবে না।’’ তাঁর দাবি ছিল, গুজরাতি এবং রাজস্থানি (মারওয়াড়ি) ব্যবসায়ীরা মুম্বই ছাড়লে অর্থসঙ্কটে পড়বে মহারাষ্ট্র। ওই মন্তব্যের জেরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হওয়ায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি।
বিরোধী শিবিরের একাংশ বলছে, শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকলেও উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস যে ভাবে সরকারের অন্দরে ক্ষমতার ‘ভরকেন্দ্র’ হয়ে উঠছেন, তাতে শাসকজোটের অন্দরে টানাপড়েন বাড়ছে। উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কোশিয়ারিকে শিবাজি-মন্তব্য নিয়ে শিন্ডেসেনার আক্রমণ তারই ইঙ্গিতবাহী। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, বিতর্ক এড়াতেই কি তাঁকে সরে যাওয়ার বার্তা দিল মোদী সরকার?