Coromandel Express accident

মালগাড়ির উপরে করমণ্ডলের ইঞ্জিন কী ভাবে? রেলের বক্তব্য আর বাস্তব ছবি কি এক কথা বলছে?

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিমি। দুর্ঘটনার সময় সেটির গতি কত ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ট্রেনটি যে ভাল গতিতে ছুটছিল, ধাক্কার অভিঘাতে সেটা প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২৩ ১৫:০০
Coromandel express accident

দুর্ঘটনার পর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরাগুলি ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে। ছবি: পিটিআই।

মালগাড়ির বগির উপর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। দেখলে মনে হবে, কেউ যেন ধরে বসিয়ে দিয়েছে! পাশেই বেশ কয়েকটি কামরা লাইনের দু’দিকে কোনওটা কাত হয়ে, কোনওটা উল্টে পড়ে আছে। ওড়িশার বাহানগা বাজার এলাকার যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তা দেখলে মনে হবে মালগাড়ির তিন-চারটি বগিকে একেবারে পিষে দিয়ে শেষমেশ একটি বগির মাথায় উঠে থমকে গিয়েছে করমণ্ডলের ইঞ্জিন। মালগাড়িকে পিছন থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ধাক্কা মেরেছিল কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। শনিবার সকালেই রেলমন্ত্রী উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ঘোষণা করেছেন। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন রেলের সেফটি কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব রেল)। যদিও রেলেরও দাবি, বাহানগা বাজারে কোনও মুখোমুখি বা পিছন থেকে সংঘর্ষের ঘটনা হয়নি। পাশাপাশি সংঘর্ষ হয়েছে।

কিন্তু যে ভাবে মালগাড়ির উপরে করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে গিয়েছে, তা দেখলে সাদা চোখে মনে হবে, পিছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা মারার অভিঘাতের ফল। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, কত গতিতে ধাক্কা মারলে করমণ্ডলের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর উঠে যেতে পারে? রেল যদিও তাদের বিবৃতিতে মালগাড়ির প্রসঙ্গ আনেনি। করমণ্ডল এবং বেঙ্গালুরু সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের বেলাইন হওয়া এবং পাশাপাশি ধাক্কাকেই কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। দুর্ঘটনায় সময় কত গতিতে ছুটছিল ট্রেনটি সে বিষয় এখনও স্পষ্ট নয়। তবে করমণ্ডল যে ভাল গতিতেই ছুটছিল, ধাক্কার অভিঘাতে সেটাই প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর পরই করমণ্ডলের সামনের দিকের কয়েকটি কামরা একেবারে দুমড়েমুচড়ে যায়। মোট ১৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে যে দৃশ্য বার বারই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে, কী ভাবে মালগাড়ির উপরে চেপে বসল ইঞ্জিন? রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অভিজ্ঞদের মতে, যে কোনও ইঞ্জিনের সামনে, বা কামরার মধ্যে ও পিছনে ‘বাফার’ থাকে।

ছবিতে মালগাড়িটি দেখে মনে হচ্ছে, সেটি ভর্তি ছিল। তাঁদের মতে, ধরে নেওয়া যাক ওই মালগাড়ির পিছনে করমণ্ডল ধাক্কা মেরেছে। সে ক্ষেত্রে মালগাড়ি খালি থাকলে তার কামরার পিছন দিকে ঢুকে যেত ইঞ্জিন। কিন্তু ওয়াগনগুলি ভর্তি ছিল বলেই ধাক্কার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনের সামনে থাকা বাফার সেটিকে ঠেলে উপরের দিকে তুলে দিয়েছে। যে কারণে ওয়াগনের উপর গিয়ে আটকে গিয়েছে ইঞ্জিন। যদিও এ সবই প্রকাশ্যে আসা ছবি দেখে মনে করা হচ্ছে। বাস্তবের সঙ্গে তার কোনও মিল আছে কি না, তা বোঝা যাবে তদন্ত শেষে। রেলও একই কথা জানিয়েছে। তাদের দাবি, তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঠিক কী হয়েছে, তা বলা সম্ভব নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন