Bengaluru Café Incident Arrest

৪২ দিন ধরে কোন কোন কৌশলে পুলিশকে এড়িয়ে গিয়েছেন ক্যাফেকাণ্ডের দুই চক্রী? কোন ভুলে গ্রেফতার

৪২ দিন দেশের নানা প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছেন বেঙ্গালুরুর ক্যাফেকাণ্ডের অন্যতম দুই মূল অভিযুক্ত মুসাভির হুসেন সাজিব এবং আবদুল মাথিন তাহা। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পুলিশ তাঁদের হদিস পায়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:০৯
বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলা থেকে ধৃত দুই অভিযুক্ত।

বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলা থেকে ধৃত দুই অভিযুক্ত। ছবি: পিটিআই।

১ মার্চ, ২০২৪। বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরমের ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় জখম হন ১০ জন। তার পর থেকে ৪২ দিন ধরে দেশের নানা প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছেন এই ঘটনার অন্যতম দুই মূল অভিযুক্ত মুসাভির হুসেন সাজিব এবং আবদুল মাথিন তাহা। পুলিশ তাদের টিকিও ধরতে পারেনি। অথচ, এই দু’জনকে খুঁজতে দেশ জুড়ে চিরুনিতল্লাশি চালিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। অবশেষে শুক্রবার দু’জন ধরা পড়েন। এনআইএ এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যৌথ অভিযানে কাঁথি থেকে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তদের।

Advertisement

তাঁদের কীর্তিতে যখন সারা দেশ তোলপাড়, যখন পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থার দুঁদে আধিকারিকেরা তাঁদের খুঁজতে আদাজল খেয়ে নেমেছেন, তখনও কী ভাবে ৪২ দিন গা ঢাকা দিয়ে রইলেন অভিযুক্তেরা?

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, গা ঢাকা দেওয়ার সময়ে মুসাভিরদের অন্যতম হাতিয়ার হয়েছিল তাঁদের সাহসিকতা। কোনও অবস্থাতেই তাঁরা ভয় পাননি। সেটাই তাঁদের অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল। চেন্নাই থেকে ওড়িশা হয়ে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকেছিলেন। বিভিন্ন এলাকায় নাম বদলে বদলে ঘুরে বেরিয়েছেন। পুলিশ তাঁদের হদিস পায়নি।

কম খরচের বিভিন্ন হোটেলে থেকেছেন অভিযুক্তেরা। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই অভিযুক্ত যেখানেই গিয়েছেন, কম খরচের হোটেলের সন্ধান করেছেন। রাত কাটিয়েছেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ঘরভাড়া দিয়ে। বার বার নাম বদলেছেন। কখনও তাঁদের পদবি ছিল আগরওয়াল, কখনও দাস। নামের মাধ্যমে ধর্মপরিচয়ও গোপন করতে চেয়েছেন তাঁরা।

তদন্তকারীরা আরও জানান, থাকার জন্য মূলত ভিড় পর্যটন এলাকাগুলিকেই বেছে নিয়েছিলেন এই দুই অভিযুক্ত। যাতে তাঁদের সহজে চিহ্নিত করা না যায়। একাধিক মোবাইল ফোন, সিম কার্ড ব্যবহার করেছেন দু’জনেই। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বিস্ফোরণ পরিকল্পনামাফিক হলেও তার পরে কী হবে, সেই পরিকল্পনা করেননি অভিযুক্তেরা। ঘটনার পরে কোথায় কী ভাবে পালাবেন, সব ঘুরতে ঘুরতে ঠিক করেন। আগে থেকে কিছুই স্থির ছিল না। ফলে তাঁদের পরিকল্পনা আগে থেকে আন্দাজও করা যায়নি। গোপন সূত্রেও মেলেনি কোনও ইঙ্গিত।

অভিযুক্তেরা মোট চারটি রাজ্যের ভুয়ো পরিচয় ব্যবহার করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক এবং ত্রিপুরার ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখান বিভিন্ন হোটেলে। তবে একটি ভুলই তাঁদের ধরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার একটি হোটেলে ছিলেন দুই অভিযুক্ত। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ধরে তাঁরা সেখানে থাকছিলেন। যা তাঁদের ধরিয়ে দিয়েছে। সেখান থেকেই সন্দেহ জন্মায় তদন্তকারীদের মনে। তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে পরবর্তী হামলা কোথায় করবেন, সেই ছকও কষছিলেন অভিযুক্তেরা। যতটা সম্ভব মোবাইল ফোন বা প্রযুক্তি থেকে নিজেদের দূরে রেখেছিলেন।

অভিযুক্তদের এক জনের মাথার টুপি দেখেও সন্দেহ হয়েছিল তদন্তকারীদের। ওই টুপি চেন্নাইয়ের দোকান থেকে কেনা হয়েছে বলে জানতেন তাঁরা। টুপি দেখার পরেই দু’জনকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement