হেমন্ত সোরেন ও কল্পনা সোরেন। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জমি দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এখন ইডি হেফাজতেই রয়েছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। এমন অবস্থায়১৮তম বিবাহবার্ষিকী উদ্যাপনের জন্য সমাজমাধ্যমকেই বেছে নিলেন জেএমএম নেতার স্ত্রী কল্পনা সোরেন। হেমন্তের এক্স হ্যান্ডল থেকে তিনি লেখেন, এই বিশেষ দিনে স্বামী তাঁর সঙ্গে না থাকলেও তাঁর বিশ্বাস, খুব শিগগিরই এই ষড়যন্ত্রকে হারিয়ে বাড়িতে ফিরে আসবেন তিনি।
এক্স হ্যান্ডলে কল্পনা লেখেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের অস্তিত্ব এবং পরিচয় রক্ষা করতে চান বলেই হেমন্তজি মাথা নত করেননি। তিনি এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করাকেই বেছে নিয়েছেন এবং সেই কারণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।’’
কল্পনা আরও লেখেন, ‘‘আজ আমাদের ১৮ তম বিবাহবার্ষিকী, কিন্তু হেমন্তজি পরিবারের সঙ্গে নেই। বাচ্চাদের সঙ্গে নেই। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এই ষড়যন্ত্রকে হারিয়ে বিজয়ী হবেন এবং খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে ফিরে আসবেন। আমি ঝাড়খণ্ডের এক জন সাহসী যোদ্ধার জীবনসঙ্গী। আজ আমি আর আবেগপ্রবণ হব না। হেমন্তজির মতোই আমি কঠিন পরিস্থিতিতেও মুখে হাসি বজায় রাখব এবং তাঁর সাহস ও সংগ্রামের শক্তি হয়ে উঠব।’’
ঝাড়খণ্ডে মাফিয়াদের একটি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তারা বেআইনি ভাবে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে। সেই দলের সঙ্গেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্তের যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলাতেই তদন্ত চালিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেএমএম নেতা। তাঁর অভিযোগের আঙুল পদ্মশিবিরের দিকে। তিনি গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত ঝাড়খণ্ড সরকারকে নড়বড়ে করে দিতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে অপব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে।
বুধবার হেমন্তের গ্রেফতারির পর ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন হেমন্তের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তথা জেএমএম নেতা চম্পই সোরেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের পর ১০ দিনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে বলা হয়েছিল চম্পই সরকারকে। গত সোমবার সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে নতুন সরকার।
সূত্রের খবর, হেমন্ত চেয়েছিলেন স্ত্রী কল্পনাকেই তাঁর স্থলাভিষিক্ত করতে। কিন্তু দলেরই অন্তত ৪ জন বিধায়ক তাতে আপত্তি করেন, যাঁদের মধ্যে ছিলেন হেমন্তের নিজের বউদি তথা জেএমএম বিধায়ক সীতা সোরেন। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, বিধায়ক না হওয়া এবং কোনও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও কেন কল্পনাকে এমন একটি পদের জন্য বিবেচনা করা হচ্ছে। দলীয় প্রতিরোধের কাছে নতি স্বীকার করে শেষমেশ চম্পইয়ের হাতেই মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি সঁপে দেন হেমন্ত।