এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব (বাঁ দিকে), আরএলডি প্রধান জয়ন্ত চৌধরি (ডান দিকে)। — ফাইল ছবি।
নীতীশের পর এ বার জয়ন্ত। ইন্ডিয়া ব্লকে আবারও ভাঙনের সম্ভাবনায় কার্যত সিলমোহর পড়ে গেল। অখিলেশ যাদবের হাত ছেড়ে রাষ্ট্রীয় লোকদলের (আরএলডি) প্রধান জয়ন্ত চৌধরির এনডিএ শিবিরে ফেরাটা কেবল সময়ের অপেক্ষা। আসন্ন লোকসভা ভোটে জয়ন্তকে সাতটি আসন ছেড়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন অখিলেশ। রাজনৈতিক মহলের খবর, এনডিএ শিবির থেকে পাঁচটি আসন ছাড়ার কথা জানানো হয়েছে আরএলডিকে। আর তাতেই রাজি হয়েছেন জয়ন্ত। এই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন হল, কেন?
উত্তরপ্রদেশে এসপির বিশ্বস্ত জোটসঙ্গী আরএলডি। বিগত কয়েকটি ভোটে হাতে হাত মিলিয়ে লড়ার পাশাপাশি, ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকেরও অন্যতম অংশ চৌধরি চরণ সিংহের নাতি তথা অজিত সিংহের ছেলে জয়ন্ত। এসপির সমর্থনে ২০২২ সালে তিনি রাজ্যসভাতেও যান। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে জাতের পাটিগণিত কষে জয়ন্ত বুঝতে পেরেছেন, ইন্ডিয়া নয়, বরং এনডিএর সঙ্গে থাকলেই তাঁর সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক ‘লাভ’। সেই অঙ্কেই আবার বিজেপিমুখী লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের প্রাক্তনী।
সূত্রের খবর, অখিলেশ তাঁকে সাতটি আসন ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর এনডিএ থেকে এখনও পর্যন্ত আরএলডিকে পাঁচটি আসন ছাড়ার কথা জানানো হয়েছে। জয়ন্ত হিসাব কষে দেখেছেন, সে ক্ষেত্রে দু’টি আসন কমে গেলেও জেতার সম্ভাবনার নিরিখে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধাটা বেশি লাভদায়ক হতে পারে। অতীতের ফলাফল বলছে, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে জাঠ ভোটের একটি বড় অংশ আরএলডির পাশে থাকে। আর জাঠ ভোটের অন্য অংশটি পায় বিজেপি। জয়ন্তের হিসাব, বিজেপির সঙ্গে গেলে জাঠ ভোটের সিংহভাগের পাশাপাশি, বিজেপির বিশ্বস্ত অন্য জাত বা সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভোটও তাঁর ঝুলিতে আসতে পারে। ফলে এসপির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ার তুলনায় বিজেপির জোটসঙ্গী হিসাবে ভোটে লড়লে জয়ের সম্ভাবনা বেশি। আরএলডি মনে করছে, তারা এনডিএতে না থাকলে জাঠ সমাজ দোটানায় পড়ে যায় যে, বিজেপি না আরএলডি— কাকে ভোট দেওয়া যায়? কিন্তু বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে ভোটারদের সেই দ্বিধায় আর থাকতে হয় না। ফলে ভোট ভাগাভাগির সম্ভাবনাও নাকচ করা যায়।
প্রসঙ্গত, জয়ন্ত যে শিবির বদল করতে পারেন সেই ইঙ্গিত কিন্তু লখনউয়ের আকাশে-বাতাসে ভাসছিলই। বস্তুত, ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের সময়ও তা নিয়ে জল্পনা দানা বেঁধেছিল। কিন্তু জয়ন্ত বিবৃতি দিয়ে সেই জল্পনায় জল ঢালেন। কিন্তু এ বার খবর পাওয়া যাচ্ছে, বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার বিষয়ে কার্যত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন আরএলডি প্রধান।