HD Deve Gowda

‘বিজেপির সঙ্গে জোট ঘিরে ভাঙনের মুখে জেডিএস’! দেবগৌড়া-কুমারস্বামীর ‘কোপে’ কর্নাটক সভাপতি

গত ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে এনডিএতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন কুমারস্বামী। ইব্রাহিম প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা করেছিলেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:১৯
দেবগৌড়া, ইব্রাহিম এবং কুমারস্বামী।

দেবগৌড়া, ইব্রাহিম এবং কুমারস্বামী। — ফাইল চিত্র।

মতবিরোধ সামনে এসেছিল আগেই। এনডিএতে যোগদান ঘিরে এ বার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জনতা দল-সেকুলার (জেডিএস) ভাঙনের মুখে এসে দাঁড়াল। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি দেবগৌড়া বৃহস্পতিবার জেডিএসের কর্নাটক রাজ্য কর্মসমিতি ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

কর্নাটক শাখার সভাপতি তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিএম ইব্রাহিম-সহ কয়েক জন নেতা সোমবার জানিয়েছিলেন, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটে শামিল হবেন না। ইব্রাহিমকে সরিয়ে দেবগৌড়া তাঁর পুত্র তথা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামীকে কর্নাটক শাখার অস্থায়ী সভাপতি হিসাবে নিয়োগ করেছেন।

এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের আগে জেডিএসে ভাঙন অবশ্যম্ভাবী বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। ঘটনাচক্রে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন অভিভক্ত জনতা দলের সভাপতি শরদ যাদব এবং তাঁর গোষ্ঠীর নেতারা বিজেপির সহযোগী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই নয়া দল জেডিএস গড়েছিলেন দেবগৌড়া।

এ বার কার্যত কুমারস্বামীর উদ্যোগেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে জেডিএস। গত ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে এনডিএতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন কুমারস্বামী। তার পর থেকেই দলের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক নেতা জেডিএস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।

গত সোমবার দলের শীর্ষনেতৃত্বের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইব্রাহিম বলেছিলেন, ‘‘যে দলের নামে ‘সেকুলার’ রয়েছে, তারা কী ভাবে বিজেপির সঙ্গে জোটে যেতে পারে? কোনও অবস্থাতেই জেডিএস নেতা-কর্মীরা সাম্প্রদায়িক বিজেপির সঙ্গী হয়ে তাঁদের ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান থেকে সরবেন না।’’ এর পরেই দলীয় শীর্ষনেতৃত্বের ‘কোপ’ পড়ল তাঁর উপর। দেবগৌড়ার আর এক ছেলে তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রেভন্নাও এনডিএতে যাওয়ার বিরোধী বলে দলের একটি সূত্রের খবর। কুমারস্বামীর সঙ্গে রেভন্নার সংঘাত দীর্ঘ দিনের। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি দেবগৌড়া-কুমারস্বামীর পাশেই দাঁড়িয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলির মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’ আত্মপ্রকাশের পরেই বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন কুমারস্বামী। তার পর কন্নড় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৮ সালে বিজেপিকে গদিচ্যুত করতে ভোটের পর জেডিএসকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। কয়েক মাস পর অবশ্য সেই সরকার পড়ে গিয়েছিল।

কিন্তু এ বার কংগ্রেস একার শক্তিতেই সরকার গঠন করেছে। জেডিএসের সমর্থন তাদের প্রয়োজনও হয়নি, কংগ্রেসও ডাকেনি। অনেকের মতে, ক্ষমতার অলিন্দে যেতে না পেরেই সিদ্দারামাইয়া, শিবকুমারদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছেন কুমারস্বামী। দলের প্রধান দেবগৌড়া গত অগস্টে জানিয়েছিলেন, আগামী বছরের লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু পরে মত বদলান তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement