Farmers Agitation

কৃষক আন্দোলনে ফাটল, হিংসাত্মক পথের বিরোধিতা করে সরে গেল দুটি সংগঠন

পূর্ব ঘোষিত সংসদ অভিযান কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখছেন প্রতিবাদী কৃষকরা।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:২৩
আলোচনায় বসেছেন প্রতিবাদী কৃষকরা।

আলোচনায় বসেছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। ছবি: পিটিআই

বিক্ষোভের পরের দিনই ঐক্যে ফাটল। কৃষক আন্দোলন থেকে সমর্থন তুলে নিল দুটি সংগঠন। বুধবার রাষ্ট্রীয় কিসান মজদুর সংগঠন ও ভারতীয় কিসান ইউনিয়ান (ভানু)-এর তরফ থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।

কিসান মজদুর সংগঠনের নেতা ভিএম সিংহ জানিয়েছেন, যে ভাবে আন্দোলন চলছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। সেই কারণেই সমর্থন তুলে নেওয়া হচ্ছে। কৃষকদের অধিকারের দাবিতে আন্দোলন চলবে। তবে যৌথ মঞ্চ থেকে তাঁর সংগঠন সরে যাচ্ছে।

Advertisement

কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব নিয়েও একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেছেন, রাকেশ টিকায়েতের মতো নেতারা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় একবারও কৃষকদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেননি। তাই এ ভাবে আর নয়, এ বার অন্য পথে আন্দোলন করবেন তাঁরা। হিংসাত্মক বিক্ষোভে যে তাঁরা বিশ্বাস করেন না, বুধবার সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন (ভানু)-এর প্রধান ভানুপ্রতাপ সিংহ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমরা এই চলতি আন্দোলন থেকে সমর্থন তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছি। মঙ্গলবার দিল্লিতে যা ঘটেছে তার জন্য আমরা দুঃখিত ও বেদনাহত।’’

অন্য দিকে কৃষকদের যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে বুধবার ফের আন্দোলনকারীদের শান্তি বজায় রাখতে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁদের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করা হয়েছে কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে। সংযুক্ত কিসান মোর্চা প্রথমেই ২৬ জানুয়ারি ট্র্যাক্টর মিছিলে অভূতপূর্ব অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। তারপরেই মোর্চার অভিযোগ, ‘আমরা আন্দোলনে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি। কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সঙ্গে প্রশাসন আঁতাত করে শান্তি বিঘ্নিত করেছে।’ কমিটি মূল কৃষক আন্দোলন শুরু হওয়ার ১৫ দিন পর আলাদা জায়গায় নিজেদের আন্দোলন শুরু করেছিল। সংযুক্ত কৃষক মোর্চার সঙ্গে এর যোগ নেই।

এক কথায় মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া যাবতীয় অশান্তির দায় কিসান মজদুর সংঘর্ষ কমিটির ঘাড়ে দিয়ে দিতে চেয়েছে মোর্চা। পাল্টা জবাব দিয়েছে কমিটিও। তাদের তরফে সারওয়ান সিংহ পন্ধর মঙ্গলবারের ঘটনায় কোনওরকম ভূমিকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সদস্যরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছিলেন। কিছু সমাজবিরোধী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কিছু লোকের জন্য আমাদের সমালোচনা শুনতে হয়েছে।’’

আন্দোলনকারীদের মধ্যে বিভাজনের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার তৎপতার সঙ্গে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কাজে নেমে পড়েছে। ট্র্যাক্টর মিছিল নিয়ে পুলিশের দায়ের করা অভিযোগে উঠে এল ৬ কৃষক নেতার নাম। এ ছাড়াও ষড়যন্ত্রের অভিযোগেএফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ । সেখানে যোগেন্দ্র যাদব-সহ ৪০ জন কৃষক নেতার নাম রয়েছে। তালিকায় রয়েছেন রাকেশ টিকায়েতও। দিল্লির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পুলিশ বুধবার দুপুর পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে ২০০ প্রতিবাদীকে। করা হয়েছে ২২টি মামলা। সকলের বিরুদ্ধেই হিংসা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। আর কোনও গোলমাল যাতে না হয়, সেই কারণে সিঙ্ঘু সীমানায় সব রকম গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে এখন থমথমে হয়ে রয়েছে পরিস্থিতি।

কিছুটা দমে গিয়েছেন কৃষকরাও। সূত্রের খবর, পূর্ব ঘোষিত সংসদ অভিযান কর্মসূচি আপাতত স্থগিত রাখছেন প্রতিবাদী কৃষকরা। আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, ১ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন তাঁরা সংসদ ভবন অভিযান করবেন। আপাতত সেই কর্মসূচি থেকে সরে আসতে চাইছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন
Advertisement