Digital Arrest Scam

বৃদ্ধাকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে ৮০ লক্ষ টাকা আদায়! রাজস্থানে প্রতারণার বড় চক্রের সন্ধান পেল পুলিশ

মহিলার থেকে টাকা আদায়ের পর ওই টাকা প্রায় ১৫০টি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করা হয়! অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে তা আবার ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে ফেলা হয়! এখনও পর্যন্ত ১৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:০৭

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

এক সপ্তাহ ধরে ডিজিটাল হেফাজতে রাখার বাহানায় রাজস্থানের বাসিন্দা এক বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হল ৮০ লক্ষ টাকা! গত মাসের শেষে রাজস্থানের অজমেরে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় শনিবার এখনও পর্যন্ত ১৫ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

শনিবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারিত বৃদ্ধা অজমেরের বাসিন্দা। গত ২৩ নভেম্বর একটি অচেনা নম্বর থেকে তাঁর হোয়াট্‌সঅ্যাপ নম্বরে একটি ভিডিয়ো কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে মুম্বই পুলিশের সাইবার শাখার আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে এক পুরুষ জানান, সাম্প্রতিক একটি গুরুতর অপরাধের সঙ্গে বৃদ্ধার যোগসূত্র থাকায় তাঁকে ডিজিটাল গ্রেফতার করা হচ্ছে! এর পর তাঁকে দফায় দফায় একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয়। ভয় পেয়ে সে কথা মেনে টাকা পাঠিয়েও দেন বৃদ্ধা।

প্রায় সপ্তাহখানেক এ ভাবে চলার পর বৃদ্ধা বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন তিনি। তত ক্ষণে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা! এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। জয়পুরের সাইবার অপরাধ দমন শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহেশ চৌধরির নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশের একটি বিশেষ দল। জানা যায়, মহিলার থেকে ৮০ লক্ষ টাকা নেওয়ার পর ওই টাকা প্রায় ১৫০টি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছে! অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার পর তা আবার ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে ফেলা হয়েছে! তদন্তে নেমে ঘটনার সঙ্গে বড়সড় কোনও চক্রের যোগসূত্র খুঁজে পায় পুলিশ। লাগাতার তল্লাশির পর শনিবার ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, ডেবিট কার্ড, পাসবই ইত্যাদি। এই প্রতারণা চক্রে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গত কয়েক মাস ধরেই ডিজিটাল গ্রেফতারির একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যে অ্যাকাউন্টগুলি থেকে এই ধরনের সাইবার প্রতারণা করা হচ্ছে, তার বেশ কয়েকটি চিহ্নিত করে ব্লক করা হয়েছে। এমন প্রায় ৫৯,০০০ অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। নামে গ্রেফতার শব্দটি থাকলেও গ্রেফতারির সঙ্গে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’-র কোনও সম্পর্ক নেই। এটি আসলে সাইবার প্রতারণার নয়া ফাঁদ। এখানে প্রতারকেরা সিবিআই, নারকোটিক্স, আরবিআই কিংবা শুল্ক এবং আয়কর আধিকারিক হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফোন করেন। এর পর ওই ব্যক্তি কিংবা তাঁর পরিজনদের কারও বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগের কথা বলে তাঁকে ডিজিটাল গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়।

Advertisement
আরও পড়ুন