দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।
মুম্বইয়ের কুরলায় বাস দুর্ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৪৯ জন। আরও বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা, এমনটাই আশঙ্কা প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে মৃত যাত্রীদের নামপরিচয়। তবে বাস দুর্ঘটনার নেপথ্যে কোন কারণ? বাসচালকের ভুলেই কি দুর্ঘটনা? এখন এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার রাতেই বাসচালক সঞ্জয় মোরেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চালকের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বাস চালানোর সময় তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্জয়কে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, গত ১ ডিসেম্বর চাকরিতে যোগ দেন তিনি। এর পরেই মহারাষ্ট্র সরকারের অধীনস্থ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট আন্ডারটেকিং (বেস্ট)-এর স্বয়ংক্রিয় ওই বাসটি চালানোর দায়িত্ব পান সঞ্জয়। এর আগেও তিনি এক ঠিকাদারের অধীনে বাসচালক হিসাবে কাজ করতেন। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় বাস চালানোয় হাতেখড়ি হয় মাত্র দিন দশেক আগেই! এর পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি বাসচালকের ভুলেই দুর্ঘটনা? উত্তর খুঁজতে মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরাও। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। বাসটির কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও।
সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ মুম্বইয়ের কুরলা এলাকায় কুরলা স্টেশন থেকে আন্ধেরিগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০-৪০টি গাড়িতে ধাক্কা মেরে ফুটপাথে উঠে যায়। চার পথচারী-সহ মৃত্যু হয় সাত জনের। মৃত যাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন নার্স কানিস আনসারি (৪৫)। রাতের শিফ্টের জন্য হাসপাতালে যাচ্ছিলেন কানিস। রয়েছেন সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া আফরিন শাহও (১৯)। চাকরির প্রথম দিন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি! রিকশা না-পেয়ে প্রথমে বাবাকে ফোন করেছিলেন তরুণী। বাবাই তাঁকে কুরলা বাসে চড়তে বলেন। এর কিছু ক্ষণ পরেই হাসপাতাল থেকে ফোন পান বাবা। জানা যায়, মৃত্যু হয়েছে আফরিনের। দুর্ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মহারাষ্ট্রের ‘মহাজুটি’ সরকার। পাশাপাশি, নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে।