গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতাদের না যাওয়ার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে বামেদের ‘ভূমিকা’ রয়েছে! শুক্রবার এমনটাই দাবি করলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য তথা কেরল রাজ্য কমিটির সম্পাদক এমভি গোবিন্দন। তিনি বলেন, ‘‘বামেরা আগেই এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। কংগ্রেস নেতাদেরও সেই পথ বেছে নিতে প্রভাবিত করা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আগেই ঘোষণা করেছিলেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন এবং রামলালার মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে তাঁরা যাবেন না। বুধবার কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের তরফে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় যাবেন না প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।
রামমন্দির উদ্বোধন এড়িয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এআইসিসির সাধারণ সম্পাদর জয়রাম রমেশ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষ ভগবান রামের পুজো করেন। ধর্মাচরণ মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বিজেপি এবং আরএসএস দীর্ঘ দিন ধরে অযোধ্যায় মন্দিরনির্মাণকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। নির্বাচনী ফায়দার কথা মাথায় রেখেই অযোধ্যায় অর্ধসমাপ্ত মন্দিরের উদ্বোধন করা হচ্ছে। যা ২০১৯ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং ভারতের কোটি কোটি মানুষের ভাবাবেগের পরিপন্থী।’’
জয়রাম ওই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই বিজেপির তরফে কংগ্রেসকে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে প্রচার শুরু হয়েছে। তার মোকাবিলায় কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ টেনেছেন দেশের চার শঙ্করাচার্যের প্রসঙ্গ। ‘অর্ধসমাপ্ত’ রামমন্দির উদ্বোধন ‘হিন্দুধর্মের রীতির পরিপন্থী’ অভিযোগ তুলে চলতি মাসের গোড়াতেই ওড়িশায় পুরী গোবর্ধনপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী জানিয়েছিলেন, তিনি অযোধ্যার অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠের জ্যোতির্মঠপীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী জানান, দেশের চার পীঠের চার শঙ্করাচার্যই ঠিক করেছেন ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার। হরিদ্বারে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় সনাতন ধর্মের লঙ্ঘন হতে চলেছে। চার শঙ্করাচার্যের কেউই তাই সেখানে উপস্থিত থাকবেন না।’’ রামমন্দির উদ্বোধনের আগে হিন্দুধর্মের চার শীর্ষস্থানীয় সন্তের এই সিদ্ধান্ত বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সিপিএম নেতা গোবিন্দনও শুক্রবার ‘অর্ধসমাপ্ত’ রামমন্দির উদ্বোধন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।