শশী এবং অশোক। ফাইল চিত্র।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত বনাম কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী তারুর। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, আগামী ১৭ অক্টোবর দলের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে।
গহলৌতের ঘনিষ্ট একটি সূত্র সোমবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর দিল্লি আসবেন তিনি। সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন জমা দেবেন ২৬ সেপ্টেম্বর। মরুরাজ্যের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী, ৭১ বছরের অশোক কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের অন্যতম। ছাত্রাবস্থা থেকেই কংগ্রেস রাজনীতি করেছেন তিনি। অন্য দিকে, একদা রাষ্ট্রপুঞ্জের আন্ডার সেক্রেটারি পদে কর্মরত তারুরের বয়স ৬৬ হলেও তিনি সক্রিয় রাজনীতি করেছেন দেড় দশকরেও কম সময়।
সোমবার তারুর হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ভূপেন্দ্র হুডার ছেলে দীপেন্দ্র এবং দিল্লির কংগ্রেস নেতা জয়প্রকাশ অগ্রবালের উপস্থিতিতে সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেন তারুর। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, তারুর সভাপতি পদের নির্বাচনে লড়ার জন্য সনিয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। সনিয়া তাঁকে ‘সবুজ সঙ্কেত’ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০-র অগস্টে কংগ্রেসের অন্দরে ‘সুনেতৃত্বের অভাব এবং সাংগঠনিক সমস্যা’ তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়াকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ২৩ জন নবীন এবং প্রবীণ নেতা। দাবি তুলেছিলেন, দলে স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের। পাশাপাশি, ‘হাইকমান্ডের’ কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। দলের অন্দরে সেই ‘বিদ্রোহী ২৩’ (গ্রুপ-২৩ বা জি-২৩ নামে যাঁরা পরিচিত ইতিমধ্যেই) –এর মধ্যেই রয়েছেন তারুর এবং ভূপেন্দ্র। গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, জিতিন প্রসাদের মতো জি-২৩-এর নেতাদের কয়েক জন ইতিমধ্যেই দল ছেড়েছেন।
নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার জন্য কংগ্রেসে ভোট নেওয়া ১৭ অক্টোবর। ভোটগণনা ১৯ অক্টোবর। এআইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের তরফে ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ অক্টোবর। সর্বসম্মতিক্রমে কেউ সভাপতি হিসাবে মনোনীত হলে, কিংবা একের বেশি প্রার্থী না থাকলে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না।
কিন্তু বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বতা হতে পারে গহলৌত-তারুরের। যদিও ইতিমধ্যেই অনেকগুলি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী সভাপতি হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করে তা অনুমোদন করেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটি এড়িয়ে সর্বসম্মতির ভিত্তিকে সভাপতি মনোনয়নের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। প্রসঙ্গত, ‘গাঁধী পরিবারের অনুগত’ হিসাবে পরিচিত গহলৌতও সম্প্রতি একাধিক বার কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি পদে রাহুলের নাম নিয়ে প্রকাশ্যে সওয়াল করেছেন।