Bilkis Bano Case

বিলকিস মামলার রায় বোঝাল কারা অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে, রাহুলের খোঁচা বিজেপিকে

সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর দাবি, বিলকিস বানোর অক্লান্ত সংগ্রাম অহংকারী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়ের প্রতীক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩০
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

গুজরাতে ২০০২ সালের গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গাপর্বে বিলকিস বানো মামলায় গণধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের দোষীদের জেলে ফেরত পাঠানোর রায়কে স্বাগত জানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ও গুজরাতের শাসকদল বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় ফের দেশকে জানিয়ে দিল কারা অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষক।’’

Advertisement

বিলকিস মামলার ১১ অপরাধীর মেয়াদ শেষের আগে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত গুজরাত সরকার নিয়েছিল, সোমবার তা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ, মুক্তি পাওয়া ওই ১১ জন অপরাধীকেই আবার ফেরত যেতে হবে জেলে। তবে মামলার শুনানি চলবে। মুক্তির জন্য ওই অপরাধীদের মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে নতুন করে আবেদন করতে হবে বলে জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চ। কারণ মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতেই বিলকিস-সহ ২০০২ গুজরাত দাঙ্গাপর্বের মামলাগুলির বিচার হয়েছিল।

শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তে স্বস্তিতে বিলকিসের পরিবার। শীর্ষ আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে হিন্দিতে রাহুলের পোস্ট, ‘‘নির্বাচনী লাভের জন্য ন্যায়বিচারকে হত্যা করার প্রবণতা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য বিপজ্জনক।’’ পাশাপাশি দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের জন্য বিলকিসকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘বিলকিস বানোর অক্লান্ত সংগ্রাম অহংকারী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়ের প্রতীক।’’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ওই ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছিল। এর পরই ১১ জনকে ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় আদালত। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ১১ জনের মুক্তির পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাধে।

বিতর্কের মধ্যেই গুজরাত সরকার জানায় যে, জেলে ওই ১১ জন ধর্ষক এবং খুনি ‘ভাল আচরণ’ করেছেন, সে কারণেই তাঁদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছে। যদিও প্রতিপক্ষ দাবি করে, ওই ১১ জন বিভিন্ন সময় প্যারোলে মুক্তি পেয়ে যখন জেলের বাইরে ছিলেন, তখনও তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছিল। এঁদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে প্যারোলে মুক্ত থাকার সময় অপরাধমূলক কার্যকলাপের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। মোট ১০ জনই বিভিন্ন সময়ে প্যারোলের নিয়মভঙ্গ করেছেন বলেও অভিযোগ ওঠে।

২০০২ সালে গোধরাকাণ্ডের পর গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা চলাকালীন ৩ মে দাহোড় জেলার দেবগড় বারিয়া গ্রামে হামলা চালানো হয়। গ্রামের বাসিন্দা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ করা হয়। বিলকিসের চোখের সামনেই তাঁর তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারেন হামলাকারীরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বইয়ের সিবিআই আদালতে কঠোর সাজার পক্ষে সওয়াল করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাবাসের রায় দিয়েছিল ওই বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছিল।

আরও পড়ুন
Advertisement