শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদের সদ্যসমাপ্ত ভোটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ বিপুল জয় পেলেও ধরাশায়ী হয়েছে তাদের তিন সহযোগী দল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের জোটের ছোট শরিকদের ৬টি আসন ছাড়া হয়েছিল। তার মধ্যে ৪টিতেই হেরে গিয়েছে তারা।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কোনও আসন পায়নি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দলের ‘বিদ্রোহী’ নেতা-কর্মীদের নিয়ে গড়া তৃণমূল বিএনপি (বাংলাদেশে ‘কিংস পার্টি’ নামে যার পরিচিতি)। সিলেট-৬ আসনে তৃতীয় হয়েছেন দলের চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী। হেরেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক তৈমুর আলম খন্দকারও। এ বারের ভোটে তৃণমূল বিএনপি ২৩০ আসনে প্রার্থী দিলেও পরবর্তী সময়ে তাদের বেশ কয়েক জন ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন।
পরাজিতদের মধ্যে রয়েছেন, আওয়ামী লীগের তিন শরিক দলের শীর্ষনেতা— জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর সভাপতি হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এবং জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) বা জেপিএম-এর চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁরা সকলেই হেরেছেন নির্দল প্রার্থীদের কাছে। যাঁরা আওয়ামী লীগের ‘ডামি’ প্রার্থী হিসাবে পরিচিত।
জাসদের সভাপতি ইনু গত তিনটি ভোটে কুষ্টিয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। এ বার সেই আসনে নির্দল প্রার্থী তথা মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিনের কাছে তিনি হেরেছেন। রাজশাহী-২ আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাদশা নির্দল প্রার্থী তথা রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমানের কাছে হেরেছেন। পিরোজপুর-২ আসন থেকে ছ’বার জাতীয় সংসদের ভোটে জেতা মঞ্জু এ বার হেরেছেন নির্দল প্রার্থী তথা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন মহারাজের কাছে।
৩০০ আসনের জাতীয় সংসদে ভোট হয়েছিল ২৯৮টিতে (একটি আসনে এক প্রার্থীর মৃত্যু এবং অন্যটিতে সব মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় ভোট হয়নি)। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ২২৫টি। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-কে ছেড়েছিল ২৬টি আসন। তারা ১১টিতে জিতেছে। নির্দল ও অন্যরা পেয়েছে ৬২টি। জয়ী নির্দলদের বড় অংশই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।