রাজস্থানের সভায় রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
নরেন্দ্র মোদী সরকার জোর করে অরণ্য সন্নিহিত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জমি দখল করে শিল্পপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার লোকসভায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘ইন্ডিয়া’র আনা অনাস্থা বিতর্কে বক্তৃতার শুরুতেই রাহুল বলেন, “আমি আদানি নিয়ে কিছু বলব না, আদানি নিয়ে আমি কথা বললেই অনেকে দুঃখ পান।” এর পরে রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় কংগ্রেসের জনসভায় যোগ দিতে যান ওয়েনাড়ের সাংসদ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ‘বনবাসী’ বলে, আর তাঁদের জমি ছিনিয়ে আদানিকে দিয়ে দেয়। অন্য দিকে, কংগ্রেসের লক্ষ্য আদিবাসীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা।’’
ইউপিএ জমানায় ওড়িশায় নিয়ামগিরি পাহাড়ে আদিবাসীদের জমি দখল করে বেদান্ত শিল্পগোষ্ঠীর খনি এবং শিল্পপ্রকল্পের বিরোধিতা করেছিলেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সরকারের আমলেই আদিবাসীদের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর হয়েছিল ‘অরণ্যের অধিকার আইন’। তাতে বলা হয়েছিল, অরণ্যবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার থাকবে জঙ্গলে। পরিকাঠামো তৈরি বা শিল্পের জন্য জঙ্গল কাটার প্রয়োজন হলে জঙ্গলের উপরে নির্ভরশীল আদিবাসী বা তফসিলি জনজাতির মানুষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল ওই আইনে।
কিন্তু মোদী সরকারের জমানায় সংসদে পাশ হওয়া বিলে সেই শর্ত শিথিল করা হয়েছে। আদিবাসীদের সংগঠন বা বন সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত নাগরিক সংগঠনগুলির বক্তব্য না-শুনে, বিরোধীদের আপত্তিতে কান না দিয়েই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবসে’ বাঁশওয়াড়ার আদিবাসী অধ্যুষিত মানগড়ে রাহুল বিজেপি শাসিত মণিপুরে জনজাতিদের বিরুদ্ধে গত তিন মাসের ধারাবাহিক হিংসার ঘটনা নিয়েও সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি মণিপুরে আগুন লাগিয়েছে। মানুষ খুন হচ্ছেন। নারীরা ধর্ষিত হচ্ছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী মোদী চাইলে দু-তিন দিনে সেই আগুন নিভিয়ে ফেলা যেত।’’
চলতি বছরের শেষেই রাজস্থানে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। সে রাজ্যের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের বড় অংশ বরাবরই কংগ্রেসের পাশে। এ বারেও দক্ষিণ রাজস্থানের বেশ কিছু অঞ্চলে আদিবাসী ভোট ‘নির্ণায়ক’ হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।