ঝাড়গ্রামের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রে বিজেপিকে হারাতে বিরোধী দলগুলি একমঞ্চে এসে নতুন জোট ‘ইন্ডিয়া’ গড়েছে। কিন্তু সেই ‘ইন্ডিয়া’র শরিক কংগ্রেস এবং বামেরা বাংলায় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধারাবাহিক ভাবে তৃণমূলের বিরোধিতা করছে বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ উপলক্ষ্যে বুধবার ঝাড়গ্রামে সরকারি পরিষেবা বিতরণ কর্মসূচিতে মমতা বলেন, ‘‘এখানে তো রাম, বাম, কংগ্রেস সব এক হয়ে গিয়েছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, ওখানে ‘ইন্ডিয়া’ আর এখানে ‘বিজেন্ডিয়া’। বিজেপির সঙ্গে বসে আছে। লজ্জাও করে না। মানুষের একটা নীতি থাকে। সেই নীতিটা মেনে চলতে হয়। আমাদের লড়াই সিপিএমের বিরুদ্ধে বাংলায়, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাংলায়, যদি এমন করতে থাকে ওরা।’’
তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষপটে পদ্মশিবির যে তৃণমূলের মূল নিশানা, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থাকবেই।’’ ঝাড়গ্রামের ওই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ নিয়ে তাঁর আপত্তির কথাও স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি ভারতীয় সংবিধান এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বহুত্ববাদী আদর্শের পরিপন্থী। দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর পারিবারিক রীতির বৈচিত্র রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সব কিছু এক করে দেওয়া চলবে না।’’
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ডাকে পটনায় বিজেপি বিরোধী দলগুলির প্রথম বৈঠকের আগেও বাংলায় বাম এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি-সখ্যের অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির শেষ দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সভায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘কংগ্রেস অনেক রাজ্য চালিয়েছে। সিপিএমের সবচেয়ে বড় দোসর। বিজেপির বড় দোসর। আর পার্লামেন্টে (সংসদ) আমাদের সাহায্য চাও। আমরা করব তা-ও বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু মনে রেখো, বাংলায় সিপিএমের সঙ্গে ঘর করে আমাদের কাছে সাহায্য চাইতে আসবে না।’’ যদিও ২৩ জুন পটনা এবং তার পর ১৭-১৮ জুলাই কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল মমতাকে।