গাছকে জড়িয়ে ধরে আছেন চিপকো আন্দোলনের নেতা সুন্দরলাল বহুগুণা। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
নদীর পাড়ে গাছ কেটে চলছে নির্মাণকাজ। পরিবেশ বাঁচাতে গাছকে জড়িয়ে ধরে প্রতিবাদে নামলেন এলাকার বাসিন্দারা। উত্তরাখণ্ডের চিপকো আন্দোলনের ধাঁচে তাঁরা এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের নাম রেখেছেন ‘চলো চিপকো’, অর্থাৎ ‘চলো গাছকে জড়িয়ে ধরি’।
মহারাষ্ট্রের পুণেতে মুলা-মুথা নদীর পাড়ে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে নির্মাণকাজ। ‘পুণা রিভার ফ্রন্ট ডেভেলপমেন্ট সংস্থা’ তাঁদের নয়া প্রকল্পের জন্য এই এলাকায় নির্মাণকাজ চালাচ্ছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এই প্রকল্পের জন্য যথেচ্ছ ভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। যার ফলে স্থানীয় পরিবেশের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে বলে তাঁদের দাবি।
মহারাষ্ট্র প্রশাসন সূত্রে খবর, মুলা নদীর প্রায় ২২ কিলোমিটার অংশে এবং মুথা নদীর ১০.৪ কিলোমিটার অংশে এই প্রকল্পের কাজ চলছে। ২০২২ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আন্দোলনরত বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রকল্পের কাজ চালাতে গিয়ে বহু দুষ্প্রাপ্য গাছকেও কেটে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় ৬০ হাজার গাছ বসানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা। যদিও পুণে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তরফে বলা হয়েছে, কোনও পুরনো এবং দুষ্প্রাপ্য গাছকে কেটে ফেলা হয়নি। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওই এলাকায় নতুন করে গাছ বসানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ১৯৭৩ সালে অবিভক্ত উত্তরপ্রদেশের গাড়ওয়াল অঞ্চলে বনাঞ্চল কেটে সাফ করে দেওয়ার প্রতিবাদে সমাজকর্মী সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে গাছকে জড়িয়ে ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এই ‘চিপকো’ আন্দোলন পরবর্তী কালে দেশের পরিবেশ আন্দোলনকে পথ দেখিয়েছিল বলে মনে করে থাকেন অনেকে।