— প্রতীকী চিত্র।
পরীক্ষায় নকল করা রুখতে কড়া ব্যবস্থা হয়েছে। অভিযোগ, তার জেরে, চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয় বার ভাঙচুর হল কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের শৌচাগারে। বৃহস্পতিবার রাত অথবা শুক্রবার সকালে পরীক্ষা-হল লাগোয়া ছাত্রীদের একটি শৌচাগার ভাঙচুর হয়। যা নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল। সন্দেহভাজন কয়েক জন পড়ুয়ার নাম দেওয়ার পাশাপাশি, ‘সিসিটিভি ফুটেজ’ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “তদন্ত হচ্ছে।”
এই কলেজে রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষায় প্রভাবশালী চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র মদতে পরীক্ষায় নকল সরবরাহ, কাটাকুটি করে নম্বর বাড়ানোর অভিযোগ ছিল। আর জি কর কাণ্ডের পরে তা নিয়ে প্রতিবাদ হয়। তদন্তে কমিটি গড়েন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তিন মাস পরেও তদন্ত-রিপোর্ট জমা পড়েনি। তবে পরীক্ষা-ব্যবস্থায় কড়াকড়ি হয়েছে। আগে পরীক্ষা হলে সিসি ক্যামেরা থাকলেও তার নজরদারি করত শুধু কলেজ। এ বারে পরীক্ষা হলে আটটি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যার সরাসরি সম্প্রচার দেখছেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের দেহ তল্লাশি করে হলে ঢোকানো হচ্ছে। শৌচাগার থেকে ফেরার পথেও দেহ তল্লাশি হচ্ছে।
৬ জানুয়ারি থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। সে দিন দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম পরীক্ষা ছিল। সে দিন নকলের চেষ্টা করার অভিযোগে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মধ্যে চার জনের খাতা বদলে দেওয়া হয়। এক জনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সে রাতেই পরীক্ষা-হল লাগোয়া ছাত্রদের শৌচাগার ভাঙচুর করা হয়। দ্বিতীয় দিনেও একই অভিযোগে দু’জন পরীক্ষার্থীর খাতা বদলানো হয়। বৃহস্পতিবার শৌচাগার থেকে প্রচুর ‘নকল’ উদ্ধার করা হয়। তার পরে ছাত্রীদের শৌচাগারে ভাঙচুর হয়।
কলেজ সূত্রের দাবি, ভাঙচুরে সন্দেহভাজনদের মধ্যে যে পড়ুয়ারা ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ ছিল, তাঁদের অনেকে রয়েছেন। তার বাইরেও কয়েক জন আছেন। অধ্যক্ষের মণ্ডলের দাবি, “এ বার পরীক্ষায় নকল আটকাতে কড়া ব্যবস্থা হয়েছে। সে জন্যই শৌচাগারগুলিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তবে যে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাঁরা কেউ ভাঙচুরে জড়িত নন। সিনিয়র পডুয়াদের কয়েক জন জড়িত থাকতে পারেন।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃতীয় বর্ষের একাধিক পড়ুয়ার বক্তব্য, “কয়েক জনের উপরে দোষ চাপানো ঠিক নয়। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”