বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী যুবক অতুল সুভাষ। — ফাইল চিত্র।
স্ত্রীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় হয়রানির জেরে অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন বেঙ্গালুরুর যুবক অতুল সুভাষ, অভিযোগ এমনটাই। প্রায় দেড় ঘণ্টার বিদায়ী ভিডিয়ো ছাড়াও মিলেছে ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ! এর পরেই মুখ খুলেছে অতুলের পরিবার। তাঁদের দাবি, অত্যাচার করে করে তাঁদের ছেলেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
অতুলের দাদা বিকাশ কুমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমি চাই আমার ভাই ন্যায়বিচার পাক। দেশে এমন আইন থাকুক, যার মাধ্যমে পুরুষরাও ন্যায়বিচার পেতে পারেন। বিচারকেরা আইনি আসনে বসে দুর্নীতি করলে দেশের মানুষ কার কাছে বিচার চাইবে?’’ উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের পারিবারিক আদালতে অতুল-নিকিতার বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। মামলার রায় শেষমেশ অতুলের বিপক্ষে যায়। বিকাশের দাবি, আদালতে সকলের সামনে নিকিতা একবার অতুলকে বলেছিলেন, ‘‘এটুকু টাকা দিতে না পারলে তোমার আত্মহত্যা করা উচিত!’’ অথচ এমন গুরুতর কথা শুনেও নাকি হেসেছিলেন বিচারক! এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন বিকাশ। তাঁর মতে, ভাই ন্যায়বিচার পাননি। তাই ‘মিথ্যা’ মামলা লড়তে লড়তে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে শেষে বেছে নিয়েছেন আত্মহননের পথ। ভাই ফিরে আসবেন না, কিন্তু দোষীদের সকলের শাস্তি হোক, এটাই চান বিকাশ।
বিকাশের আরও দাবি, মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেরা অতুলের কাছে তিন কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। টাকা আদায় করতে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে পণ চাওয়া, অস্বাভাবিক যৌনতা, বধূ নির্যাতন এবং খুনের চেষ্টার মতো নানা গুরুতর অভিযোগে অতুলকে ফাঁসানো হয় বলে অভিযোগ। এর পরেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে অতুলের পরিবার। মামলা রুজু হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৮ এবং ৩(৫) ধারায়।
ছোট ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। বুধবার বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন অতুলের মা-ও। বলেন, ‘‘ওরা সবাই মিলে আমার ছেলেটার উপর অত্যাচার করত।’’ এর পর মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। সোমবার ভোরে বেঙ্গালুরুর একটি আবাসন থেকে অতুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘর থেকে উদ্ধার হয় ২৪ পৃষ্ঠার দীর্ঘ সুইসাইড নোট। তার পাতায় পাতায় লেখা, ‘‘বিচার এখনও অধরা!’’ এর পরেই বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।