বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী যুবক অতুল সুভাষ। — ফাইল চিত্র।
স্ত্রীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় হয়রানির জেরে অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন বেঙ্গালুরুর যুবক অতুল সুভাষ, অভিযোগ এমনটাই। মিলেছে ২৪ পাতার সুইসাইড নোট, যার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ! সেই আবহেই এ বার প্রকাশ্যে এল অতুলের স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগের বিবরণ। স্বামী অতুলের বিরুদ্ধে কী কী ‘অভিযোগ’ ছিল স্ত্রীর?
২০১৯ সালের এপ্রিলে বিয়ে হয়েছিল অতুল-নিকিতার। গত দু’বছর ধরে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের পারিবারিক আদালতে ওই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। অতুলের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর দাবি, স্বামী তাঁর সঙ্গে ‘পাশবিক’ আচরণ করেন। তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ক্রমাগত পণের জন্য চাপ দেওয়া হত বলেও অভিযোগ তোলেন নিকিতা। মেয়ের শ্বশুরবাড়ির চাপ সহ্য করতে না-পেরেই নাকি ২০২২ সালে হৃদ্রোগে মারা গিয়েছিলেন তাঁর বাবা। শুধু তা-ই নয়, অতুলের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন, অস্বাভাবিক যৌনাচার-সহ একাধিক অভিযোগ তোলেন নিকিতা। মত্ত অবস্থায় ফিরে নিকিতাকে নাকি প্রায়ই মারধর করতেন ওই যুবক। চলত অকথ্য অত্যাচার।
যদিও মৃত যুবকের পরিবারের দাবি, অতুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেরা তিন কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। যুবকের পরিবারের আরও অভিযোগ, একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অতুলের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর-ও।
সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর একটি আবাসন থেকে অতুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত্যুর আগে সুইসাইড নোটের পাশাপাশি প্রায় দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিয়ো রেকর্ডিংও রেখে যান অতুল। তাতে তাঁকে বার বার বলতে শোনা যায়, ‘‘বিচার না মেলা পর্যন্ত তোমরা যেন আমার অস্থি বিসর্জন কোরো না!’’ সম্প্রতি পারিবারিক আদালতের রায়ও তাঁর বিপক্ষেই গিয়েছিল। তবে কি সেই চাপের মুখেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হল তাঁকে? উঠছে এমনই নানা প্রশ্ন।