বেঙ্গালুরুর আত্মঘাতী যুবক অতুল। ছবি: সংগৃহীত।
স্ত্রীর দায়ের করা বিবাহবিচ্ছেদের ‘মিথ্যা’ মামলায় হাজিরা দিতে অন্তত ৪০ বার বেঙ্গালুরু থেকে জৌনপুর গিয়েছেন অতুল সুভাষ! এমনটাই জানাল বেঙ্গালুরুতে আত্মঘাতী যুবকের পরিবার। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই যুবকের স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে এফআইআর।
সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ বেঙ্গালুরুর একটি আবাসন থেকে অতুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘর থেকে উদ্ধার হয় ২৪ পাতার একটি সুইসাইড নোট। তার ছত্রে ছত্রে স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। আর প্রতিটি পাতায় লেখা, “বিচার এখনও বাকি!” মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা একটি ভিডিয়ো বার্তাতেও তাঁকে বার বার বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বিচার না মেলা পর্যন্ত তোমরা যেন আমার অস্থি বিসর্জন কোরো না!’’ এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি একের পর এক অভিযোগ উঠেছিল অতুলের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি পারিবারিক আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলার রায়ও তাঁর বিপক্ষেই গিয়েছিল। তবে কি সেই চাপের মুখেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হল তাঁকে?
প্রশ্ন তুলেছেন মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যেরাও। অভিযোগ, ওই যুবকের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা’র নিষ্পত্তির জন্য তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের লোকেরা তিন কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। অতুলের পরিবারের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক ‘মিথ্যা’ অভিযোগ তুলে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আর ফাঁসিয়েছেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া ও তাঁর পরিজনেরা!
মৃত যুবকেরা উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। বেঙ্গালুরুতে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করার সুবাদে সেখানেই থাকতেন তিনি। অতুলের স্ত্রীও চাকুরিজীবী ছিলেন। তবে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চালকালীন মাসিক ৪০ হাজার টাকা খোরপোশ দিতে হত অতুলকে। এর পরেও অতুলের স্ত্রী ও তাঁর পরিবার আরও ২-৪ লাখ টাকা দাবি করছিলেন বলে অভিযোগ। অতুলের বিরুদ্ধে উত্তরপ্রদেশের আদালতে মামলাও করেছিলেন স্ত্রী। হত্যা, অস্বাভাবিক যৌনতা, টাকার জন্য হয়রানি, গার্হস্থ্য হিংসা এবং পণের দাবিতে চাপ সৃষ্টি-সহ একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা। ওই মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য প্রায়ই সুদূর বেঙ্গালুরু থেকে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে পারিবারিক আদালতে ছুটতে হত অতুলকে। অন্তত ৪০ বার তাঁকে এমন যাতায়াত করতে হয়েছে বলে দাবি অতুলের পরিবারের। এর পরেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অতুলের স্ত্রী নিকিতা, শাশুড়ি নিশা সিংহানিয়া, শ্যালক অনুরাগ সিংহানিয়া-সহ স্ত্রীর পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে অতুলের পরিবার।