রাজেন্দ্র এবং গৌরী। ছবি: সংগৃহীত।
খুনের পর স্ত্রীর দেহের পাশে রাতভর বসেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, স্ত্রীর লাশের সঙ্গেও ‘কথা বলেন’। স্ত্রী গৌরী অনিল সাম্বারকরকে খুনে অভিযুক্ত স্বামী রাকেশ রাজেন্দ্র খেড়েকর জেরায় এ কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি বেঙ্গালুরু পুলিশের। স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে রাজেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাকেশ এক জন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। মাসখানেক আগে মহারাষ্ট্র থেকে বেঙ্গালুরুতে আসেন। একটি নামী এসি সংস্থার প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর পদে কাজ করেন। তাঁর স্ত্রী গৌরীও মহারাষ্ট্রে চাকরি করতেন। কিন্তু রাজেন্দ্র বদলি হওয়ায় সেই চাকরি ছেড়ে তাঁর সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে চলে আসেন গৌরী। বেঙ্গালুরুতে এসে চাকরির জন্য বিভিন্ন জায়গায় আবেদনও করছিলেন। কিন্তু তাঁর যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছিলেন না।
স্ত্রীর চাকরি না হওয়ায় তাঁকে নানা রকম কথা শোনানো শুরু করেন রাজেন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। তাঁর চাকরি ছাড়ার জন্য এবং বেঙ্গালুরুতে এসে কাজ না পাওয়ার জন্য রাজেন্দ্রকেই গৌরী দোষারোপ করতেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। ২৬ মার্চ রাতে বিষয়টি নিয়ে অশান্তি চরমে পৌঁছোয়। রাকেশ মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং গৌরীকে চড় মারেন বলে অভিযোগ। রাজেন্দ্রর দাবি, রান্নাঘর থেকে ছুরি এনে তাঁকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। সেই ছুরি দিয়েই স্ত্রীকে কোপানোর অভিযোগ ওঠে রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় গৌরী গুরুতর আহত হন। তার পরই মৃত্যু হয় তাঁর। তার পর স্ত্রীর দেহের পাশে সারা রাত বসে থাকেন রাজেন্দ্র। তাঁর লাশের সঙ্গে ‘কথা বলেন’। ২৭ মার্চ সকালে গৌরীর দেহ একটি ট্রলিব্যাগে ভরেন। সেটিকে বাথরুমে রাখেন। দুপুর সওয়া ১২টায় গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান রাজেন্দ্র। তার পর বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ প্রতিবেশীকে ফোন করেন রাজেন্দ্র। তাঁকে জানান যে, তাঁর স্ত্রী সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন। এক বার খোঁজ নিতেও বলেন। তার পর আবার ফোন করেন। তখন তিনি ওই পড়শিকে জানান যে, স্ত্রীকে খুন করে ট্রলিব্যাগে দেহ ভরে রেখেছেন। তার পরই পুলিশকে খবর দেন ওই পড়শি। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজেন্দ্র ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গৌরীর পরিবার রাজেন্দ্রর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই রাজেন্দ্রকে গ্রেফতার করা হবে।