প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দুই পুত্রের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তিনি। কেন তাদের খুন করা হল, সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছেন উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁর বাসিন্দা সঙ্গীতা। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সকলকে শুধু একটাই প্রশ্ন করছেন তিনি, ‘‘কী অপরাধ ছিল আমার ছেলেদের?’’ পুলিশও সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের দুই ছেলেকে খুন করার অভিযোগ ওঠে সাজিদ মহম্মদ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, বদায়ুঁর বাবা কলোনি এলাকায় একটি সালোঁর মালিক ছিলেন সাজিদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁর সালোঁর ঠিক বিপরীতে বিনোদ ঠাকুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। বিনোদ এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন সাজিদ। বিনোদের বাড়িতে গিয়ে চা পান করতে চান তিনি। সেই সময় বিনোদের তিন নাবালক পুত্র ছাদে খেলা করছিল। তাদের সঙ্গে দেখা করার নাম করে সোজা ছাদে চলে যান সাজিদ। পুলিশের দাবি, ছাদে গিয়ে ধারালো অস্ত্র চালিয়ে বিনোদের ১৩ বছর এবং ছ’বছর বয়সি দুই পুত্রকে খুন করেন। অভিযোগ, বিনোদের আট বছর বয়সি পুত্রের উপরেও আক্রমণ করেন সাজিদ। তার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত। রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলি লেগে মৃত্যু হয় তাঁর।
কেন খুন করলেন সাজিদ? সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় মৃত নাবালকদের মা সঙ্গীতা বলেন, ‘‘সাজিদ আমাদের পরিচিত। সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে এসে প্রথমে আমার কাছে একটা ক্লিপ চায়। আমি ওকে সেটা দিই। তার পর বলে আমার পাঁচ হাজার টাকার খুব দরকার। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে রাতে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। আমি আমার স্বামীকে ফোন করে সাজিদের কথা জানাই। তিনি টাকা দিয়ে দিতে বলেন। আমি দিয়ে দিই। সাজিদকে চা খেতে বলি।’’
চা বানাতে সঙ্গীতা যখন রান্নাঘরে যান, তখনই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। সঙ্গীতার কথায়, ‘‘আমি যখন চা বানাতে যাই, তখন সাজিদ আমার এক ছেলেকে নিয়ে ছাদে যায়। সেখানেই আমার দুই ছেলে খেলা করছিল। কয়েক মিনিট পরেই চিৎকার শুনতে পাই। ছুটে এসে দেখি আমার মেজো ছেলে দৌড়ে নীচে নামছে, তার হাত থেকে রক্ত ঝরছে। আমি ছাদে গিয়ে দেখি আমার দুই ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।’’ কথা বলতে বলতে বার বার তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলেন।
মৃত দুই নাবালকের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, সাজিদ যখন বিনোদের বাড়িতে এসেছিলেন, তখন বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তাঁর ভাই জাভেদ। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাড়ি থেকে সাজিদ বার হতেই তাঁকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, নিকটবর্তী একটি জঙ্গলে লুকিয়ে ছিলেন সাজিদ ও তাঁর ভাই। সেখানে পুলিশ পৌঁছলে তাদের উপরেও আক্রমণ চালান তাঁরা। শুরু হয় দু’পক্ষের সংঘর্ষ। পুলিশের তরফে গুলি চললে সেই গুলির আঘাতে প্রাণ হারান সাজিদ। পুলিশ সূত্রে খবর, গুলি লাগার পর নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অভিযুক্তকে। হাসপাতালে পৌঁছনোর পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে জাভেদ এখনও পলাতক। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।