ওয়েনাড়ে সেনার বেলি ব্রিজ। ছবি: পিটিআই।
ত্রিশক্তি কোরকে টেক্কা দিল মাদ্রাজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ। সিকিমের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে জলস্ফীতি এবং হড়পা বানের বিপর্যয়ের পর তিস্তা নদীর উপর ১৫০ ফুট দীর্ঘ বেলি ব্রিজ বানিয়েছিল ভারতীয় সেনা এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজ়েশন (বিআরও)। কেরলের ওয়েনাড়ে মঙ্গলবার ভূমিধস বিপর্যয়ের পর ত্রাণ এবং উদ্ধারের কাজে গতি আনতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ১৯০ ফুট দীর্ঘ বেলি ব্রিজ তৈরি করে ফেলল ভারতীয় সেনার মাদ্রাজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ।
উদ্ধারকাজ যত এগোচ্ছে, কেরলের ওয়েনাড়ে ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্থানীয় অসমর্থিত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল। অনেকেরই আশঙ্কা, অচিরেই তা আরও বাড়বে। কেরলের রাজস্বমন্ত্রী কে রাজন ভূমিধসে ১৯০ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন। যদিও উদ্ধারকারীরা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন বহু নিখোঁজ মানুষের সন্ধান না পাওয়া যাওয়ায় প্রকৃত সংখ্যাটি দ্বিগুণ হতে পারে।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন সেতুর মাধ্যমে বিকল্প পথে ভূমিধস কবলিত চুড়ালমালা এবং মুন্ডাক্কাইয়ের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করা যাবে। ইরুভঞ্জিপ্পুঝা নদীর উপর নির্মিত এই বেলি ব্রিজ সাহায্য করবে উদ্ধারের কাজ চালাতে। প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে সিকিমে বিপর্যয়ের সময় অতি কার্যকর হয়েছিল সেনার ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কোর’-এর তৈরি ওই ইস্পাতের অস্থায়ী সেতু।
অতীতে কলকাতা শহরের আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তৈরি হয়েছে বেলি ব্রিজ। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে মৃত্যু হয় পাঁচ জনের। ওই বিপর্যয়ের জেরে বেহালা, ঠাকুরপুকুরের মতো দক্ষিণ শহরতলির একটা বড় অংশের সঙ্গে মূল শহরের যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর নীচে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন থাকায় সঙ্গে সঙ্গে বিকল্প রাস্তা তৈরি করা যায়নি। ফলে প্রতিদিন কর্মস্থলে আসতে প্রবল অসুবিধায় পড়তেন অফিসযাত্রীরা। সেই সময়েই মাঝেরহাট স্টেশনের অদূরে শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইন এবং চেতলা খালের উপরে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে তৈরি হয়েছিল প্রায় ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের অস্থায়ী বেলি ব্রিজ। এক দিকে আলিপুর অ্যাভিনিউ এবং অন্য দিকে হুমায়ুন কবীর সরণিকে যুক্ত করেছিল সেই অস্থায়ী সেতু। ২০১৯ সালের গত বছরের জুলাইয়ে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের একাংশে ফাটল ধরার পরে লেক টাউনে কেষ্টপুর খালের উপরে ওই বেলি ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল। ১০০ টন ভার বহনে সক্ষম, ১৪০ ফুট লম্বা ওই ব্রিজটি ভিআইপি রোড এবং সল্টলেকের কেষ্টপুর খাল সংলগ্ন রাস্তার সংযোগ-মাধ্যম হিসেবে কাজ করছিল সে সময়।