মথুরার শাহি ইদগাহ মসজিদ এবং শ্রীকৃষ্ণ মন্দির। — ফাইল চিত্র।
হিন্দু পক্ষের দাবি মেনে উত্তরপ্রদেশের মথুরার শাহি ইদগাহ সরানো এবং বিতর্কিত ১৩.৩৭ একর জমির রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানিতে সম্মত হল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। মুসলিম পক্ষের তরফে এ বিষয়ে যে আপত্তি তোলা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে।
গত ৬ জুন এ বিষয়ে হিন্দু পক্ষের আবেদনের শুনানি শেষের পর রায়ঘোষণা স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি ময়াঙ্ককুমার জৈন। বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করে তিনি জানান, আগামী ১২ অগস্ট থেকে ১৮টি আবেদনের শুনানি শুরু হবে। এর আগে গত ডিসেম্বরে হিন্দু পক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়ে মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির লাগোয়া শাহি ইদগাহ মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা এবং জমি মাপজোকের নির্দেশ দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। হিন্দু পক্ষের আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন, বিষ্ণুশঙ্কর জৈন, প্রভাস পাণ্ডে এবং দেবকীনন্দন মথুরার শাহি ইদগাহকে ‘শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি’ বলে চিহ্নিত করে যে মামলা করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
অন্য দিকে, শাহি ইদগাহ মসজিদ কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন এবং ১৯৯৫ সালের সেন্ট্রাল ওয়াকফ আইন অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। যদিও চলতি বছরের জানুয়ারিতে মুসলিম পক্ষের দাবি মেনে বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘‘হিন্দু পক্ষের দাবিগুলি অস্পষ্ট।’’ তার ভিত্তিতে কোর্ট-কমিশনার নিয়োগ করে সমীক্ষার নির্দেশ অর্থহীন বলেই শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে জানায়।
প্রসঙ্গত, মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন মোগল সম্রাট অওরঙ্গজেব। অভিযোগ, অওরঙ্গজেবের নির্দেশেই ১৬৬৯-১৬৭০ সালে তৈরি করা হয়েছিল শাহি মসজিদ। কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে। সেই জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের জেরেই প্রথমে গত বছরের সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের মতো মথুরা শাহি ইদগাহেও রয়েছে ‘হিন্দুত্বের প্রমাণ’। তাই তারা ওই জমির রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।