খোয়াই থানায় অভিষেক, ব্রাত্য, দোলা। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে ফের উত্তপ্ত ত্রিপুরা। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করায় খোয়াই থানার ওসি-র সঙ্গে তুমুল তর্কবিতর্ক দলীয় নেতৃত্বের। দিনভর থানায় অবস্থান বিক্ষোভের হুঁশিয়ারিও দিলেন তাঁরা।
রবিবার সকালে ত্রিপুরায় পৌঁছেই সটান খোয়াই থানা পৌঁছন অভিষেক, যেখানে তৃণমূলের ১১ জন নেতা-কর্মীকে রাখা হয়েছে। অভিষেকের সঙ্গে থানায় রয়েছেন কুণাল ঘোষ, দোলা সেন এবং ব্রাত্য বসুও। সেখানে থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে বচসায় জড়ান তাঁরা।
কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, থানায় তার নথি দেখতে চান অভিষেক। শনিবার দিন ভর দলের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালালেন অভিষেক। ত্রিপুরা পুলিশ আসলে বিজেপি-র দালালি করছেন বলে অভিযোগ করেন দোলা।
অন্য দিকে, অভিষেক পৌঁছতেই তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। কালো পতাকা দেখানো হয় তাঁকে। ওঠে গো-ব্যাক স্লোগানও। সেই বিক্ষোভ ঠেলেই থানায় পৌঁছন অভিষেক। তৃণমূল নেতৃত্ব যেখানে থানার ভিতরে রয়েছে, বাইরে থেকে থানা ঘিরে ধরেছেন বিজেপি কর্মীরা। অভিষেকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা।
Charged up scenes at #Khowai Police Station.
— Sreyashi Dey (@SreyashiDey) August 8, 2021
TMC workers protesting against cops inside the station.
BJP workers protesting outside against TMC. pic.twitter.com/YVo73c85lz
ভোররাত থেকে খোয়াই জেলে রয়েছেন কর্মীরা। রবিবার সকালে বিমানবন্দর থেকে সটান খোয়াই থানায় পৌঁছন অভিষেক। তার আগে বিপ্লব দেব সরকারকে এক হাত নেন। বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ত্রিপুরাকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তিতে পরিণত করেছে। বিপ্লব দেব ভাবছেন, তাঁর কাছ থেকে ভিসা নিয়ে তবেই রাজ্যে পা রাখতে পারবেন বিরোধীরা। যাঁরা বড় বড় ভাষণ দেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাঁদের হাতে ত্রিপুরার গণতন্ত্রের কী অবস্থা, রাজ্যবাসী তা দেখছেন। যাঁরা এঁদের চ্যালেঞ্জ করছে, তাঁদের ধরে ধরে জেলে ঢোকানো হচ্ছে।’’
আইনের শাসন নয়, ত্রিপুরায় শাসনের আইন চলছে বলেও মন্তব্য করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এখানে মডেল সরকার চালাচ্ছে। গুজরাত মডেলের নতো এখানে আইনের শাসন নয়, শাসনের আইন চলছে। সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে ত্রিপুরা। গুন্ডামি করছে বিজেপি। মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, সরাসরি যাঁরা চ্যালেঞ্জ করছেন, জেলে ঢোকানো হচ্ছে সকলকে। গণতন্ত্র বিপন্ন রাজ্যে। হামলাকারীদের না ধরে আক্রান্তদের ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে।’’
অভিষেক আরও বলেন, ‘‘বিরোধীদের রাস্তায় নামা, কথা বলা, রাজনৈতিক কর্মসূচি করার অধিকার নেই ত্রিপুরায়। ত্রিপুরায় ঢুকলেই পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানো হচ্ছে। হুমকি দিয়ে, মানুষকে ধমক দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতাদখল করে রাখতে চাইছে বিজেপি। তবে যত ক্ষমতা আছে প্রয়োগ করুক ওরা, ত্রিপুরায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ে যাব আমরা।’’
শনিবার দফায় দফায় অশান্তির পর রবিবার ভোরের দিকে দেবাংশু ভট্টাচার্য—সহ যুব তৃণমূলের ১১ জন কর্মী ও নেতাকে গ্রেফতার করেছে ত্রিপুরা পুলিশ। মহামারি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জমা পড়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূলের দাবি, বিচজেপি-র বিরুদ্ধে সক্রি। হওয়াতেই তাঁদের নেতাদের ধরপাকড় করা হচ্ছে।