ছবি: সংগৃহীত।
ত্রিপুরায় বিজেপি বাংলার মতোই শিক্ষা পাবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার একাধিক জায়গায় তৃণমূলের উপর ‘হামলা’র ঘটনায় তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি স্বৈরতন্ত্রের সব সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। মুখে গণতন্ত্রের বড় বড় কথা বলে। যা ঘটছে, তার পরে ওই সব কথা মানুষ আবর্জনার মতো ফেলে দেবে। যেমন ফেলে দিয়েছে বাংলায়।’’
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক দিন আগে ত্রিপুরায় গিয়ে অবরোধ ও হামলার শিকার হয়েছিলেন। এ দিন তিনিও টুইট করে বলেন, ‘‘বিজেপির গুন্ডারা নিজেদের আসল রং দেখিয়ে দিয়েছে। বিপ্লব দেবের রাজত্বে তৃণমূলের উপরে বর্বরোচিত আক্রমণ হয়েছে। তবে তৃণমূল এক ইঞ্চি জমিও ছাড়বে না।’’ রাতে আর একটি টুইটে অভিষেক জানান, আগামিকাল ফের তিনি ত্রিপুরায় আসছেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘অভিষেক যাওয়ার পরেই ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এই রকম হামলা চালাচ্ছে বিজেপি।’’
বিজেপি অবশ্য ত্রিপুরায় তৃণমূলের ‘আক্রান্ত’ হওয়ার ঘটনাকে সাজানো নাটক বলেছে। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই সব ঘটনার বিরুদ্ধে ত্রিপুরার শাসক বিজেপির দিকে আঙুল তুলে কার্যত বিরোধী রাজনীতির জমিই শক্ত করতে চেয়েছে সিপিএম ও সিপিআই। আগরতলায় দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী এ দিন এক বিবৃতিতে ‘হামলা’র ঘটনাকে ‘বিজেপির দুর্বৃত্তবাহিনীর ফাসিস্তসুলভ আক্রমণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। এই ধরনের আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘গণতন্ত্রকামী’ সব মানুষকে সরব হওয়ার ডাকও দিয়েছে সিপিএম। এক সুরে বিবৃতি দিয়েছে সিপিআই-ও।
ধলাই ও ধর্মনগরের ঘটনা জানার পরেই কলকাতায় মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি জানে, এ বার ত্রিপুরায় ওরা জিততে পারবে না। সেই জন্য সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভাবছে ভয় ধরিয়ে দেবে। কিন্তু ওরা তৃণমূলকে চেনে না। আমাদের দলের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষ বিজেপিকে যে শিক্ষা দিয়েছে, ত্রিপুরার মানুষও এ বার ওদের (বিজেপি) সেই শিক্ষা দেবে। এর পর গোটা দেশে বিজেপি সেই শিক্ষা পাবে।’’ মমতার আরও চ্যালেঞ্জ, ‘‘ত্রিপুরায় স্বৈরাচারী বিজেপির অস্তিত্ব থাকবে না। পিঠে পোস্টার সেঁটে ঘুরতে হবে, আমি বিজেপি করি না।’’ ত্রিপুরায় দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে পাল্টা আঙুল তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের উপরে কেউ হামলা করেনি। প্রচার পেতে তারা নাটক করছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওদের ত্রিপুরায় কোনও সংগঠনই নেই।’’ ত্রিপুরা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কিশোর বর্মণ তৃণমূলের উপর হামলার এই অভিযোগ খারিজ করে বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ সাজানো ঘটনা। বিজেপি এই ধরনের অপসংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না।’’
তৃণমূল অবশ্য এই হামলার অভিযোগকে সামনে রেখে ত্রিপুরায় লাগাতার কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে। বাংলার মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, সাংসদ দোলা সেনকে নিয়ে রবিবার আগরতলায় আসছেন অভিষেক। টুইটে অভিষেকের বক্তব্য, “আক্রান্তদের পাশে থাকতে কাল আগরতলায় যাচ্ছি। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়ব। বিজেপি ও বিপ্লব দেব পারলে আমাকে থামাক।”