বিপর্যস্ত হিমাচলে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: পিটিআই।
হিমাচলে মেঘভাঙা বৃষ্টি আর হড়পা বানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল নয়। শনিবার রাতে মান্ডির রাজবন গ্রাম থেকে নবম মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও নিখোঁজ অন্তত ৪৫ জন। উদ্ধারকারীরা তাঁদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরকারি সূত্রের খবর, সেনাবাহিনী, জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল, আইটিবিপি, সিআইএসএফ, হিমাচল পুলিশ ও হোমগার্ডদের দল সম্মিলিত ভাবে ড্রোনের সাহায্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। উদ্ধারকাজে নেমেছেন চারশোরও বেশি মানুষ।
হিমাচলের আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা বিভাগ জানিয়েছে, ২৭ জুন থেকে ৩ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে শুধুমাত্র বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনাতেই প্রাণ গিয়েছে ৭৯ জনের। ৩১ জুলাই রাতের হড়পা বানে কুলুর নির্মান্দ, মালানা, মান্ডির পাধার, শিমলার রামপুরে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাতে মান্ডির রাজবন গ্রামে একটি বড় বোল্ডারের নীচে ১১ বছরের এক কিশোরীর মৃতদেহ মেলে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে নয় ছুঁয়েছে। এখনও নিখোঁজ প্রায় ৪৫ জন।
এনডিআরএফের আধিকারিক করম সিং জানাচ্ছেন, নিখোঁজদের খোঁজে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে উদ্ধারকারী দল। নান রকমের আধুনিক সরঞ্জাম এবং সেন্সরের সাহায্যে ধ্বংসস্তূপে চলছে প্রাণের হদিস। তাঁর দল আপাতত কুলু জেলার সামেজ গ্রামের নিখোঁজদের খোঁজে ব্যস্ত। শুধু সামেজেই অন্তত ৩৩ জন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু জানাচ্ছেন, হড়পা বানে ১১৫ টি ঘর, ২৩টি গোয়াল, ১০টি দোকান এবং তিনটি মাছের ভেড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যাবিধ্বস্তদের পরিবারকে ৫০,০০০ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ ছাড়াও আগামী তিন মাস তাদের ৫০০০ টাকা করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দেওয়া হবে রান্নার গ্যাস, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও।
গত বুধবার রাত থেকেই মেঘভাঙা বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশের শিমলা, মান্ডি এবং কুলু জেলা। ধসের কবলে ভেঙেছে বহু ঘরবাড়ি, স্কুল, হাসপাতাল। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ কুলু এবং মান্ডিতে। ওই দুই জেলায় সমস্ত স্কুল এবং কলেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। কুলুতে ভারী বৃষ্টির জেরে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বিপাশা নদী। কোথাও কুলু-মানালি জাতীয় সড়কের উপর দিয়েই বইছে নদীর জল। এই পরিস্থিতিতে ৩ নম্বর জাতীয় সড়কে সাময়িক যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুলু জেলার বাগীপুলে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ধসে চাপা পড়েছে ৯টি বাড়ি। তার মধ্যে একটি বাড়ির গোটা পরিবারই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বলে খবর। মান্ডির থালতুখড় এলাকায় মেঘভাঙা বৃষ্টিতে অন্তত ৯ জন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। সেখানে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। তবে তিন জেলা মিলিয়ে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই শিমলার। শিমলার সামেজে নিখোঁজ ৩৩ জনেরও বেশি। সুখবিন্দর সিংহ সুখু স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা করেছেন। নিখোঁজদের খোঁজে পুরোদমে চলছে উদ্ধার অভিযান।