বিষাক্ত বাতাসে ধুঁকছে দিল্লি। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির হাওয়া খারাপ! মাত্রাছাড়া দূষণ ঘুম কেড়েছে প্রশাসনের। কোথাও কোথাও বাতাসের গুণমান সূচক ৫০০ ছুঁয়ে ফেলেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মীদের একটা অংশকে বাড়ি থেকে কাজ (ওয়ার্ক ফ্রম হোম) করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। ৫০ শতাংশ সরকারি কর্মচারী প্রতি দিন বাড়ি থেকে কাজ করবেন। বুধবার থেকেই বলবৎ হচ্ছে নয়া নিয়ম।
দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বুধবার সকালে ঘোষণা করেছেন, ‘‘দূষণ কমাতে ৫০ শতাংশ সরকারি কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি সরকার। এই পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বুধবার দুপুর ১টায় শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হবে।’’ বৈঠকের পরেই স্থির হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য, দিল্লির দূষণ নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে গোপালের। মঙ্গলবারও রাজধানীতে কৃত্রিম বৃষ্টি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, এর আগে দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর জন্য অনুমতি চেয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রীকেও চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাড়া মেলেনি। তাই এ বার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন দিল্লির মন্ত্রী।
দূষণ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই দিল্লির সমস্ত স্কুলে অনলাইন মাধ্যমে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলিতেও আপাতত অনলাইনে চলবে পঠনপাঠন। অনলাইন ক্লাস হবে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও। দৃশ্যমানতা কম থাকার জন্য বাতিল হয়েছে একাধিক ট্রেন। আংশিক ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবাও।
বুধবার আগের চেয়ে খানিক কমেছে দিল্লির বাতাসের গুণমান সূচক। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের তথ্য বলছে, বুধবার সকালে রাজধানীর বাতাসের গুণমান সূচক নেমে এসেছে ৪২২-এ। তবে এখনই বিপদ কাটছে না। বুধেও সকাল থেকেই ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢেকেছে দিল্লি এবং সংলগ্ন অঞ্চল। দৃশ্যমানতাও যথেষ্ট কম। সাধারণত বাতাসের গুণমানের সূচক ৪৫০ অতিক্রম করলেই তা ‘অতি ভয়ানক’ বলে বিবেচিত হয়। গত কয়েক দিনে রাজধানীর বাতাসের গুণমান সূচক ৪৫০ পেরিয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার তা পৌঁছয় ৪৯৪-এ, যা এই মরসুমে সর্বোচ্চ। এর পরেই দিল্লির দূষণ মোকাবিলায় কড়া পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। চালু করা হয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণের চতুর্থ স্তরের (সর্বোচ্চ) পদক্ষেপ (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৪ বা জিআরএপি ৪)। এই বিধি কার্যকর থাকাকালীন অত্যাবশ্যকীয় পণ্যবাহী ছাড়া অন্য কোনও ট্রাক রাজধানী ও সংলগ্ন অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবে না। যদিও বৈদ্যুতিন গাড়ি, ডিজ়েল চালিত বিএস ৬, সিএনজি এবং এলএনজি চালিত ভারী গাড়িকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। দিল্লির বাইরের নম্বর প্লেটের কোনও ছোট পণ্যবাহী গাড়িও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া চলাচল করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে ডিজ়েল চালিত বিএস ৬ গাড়ি, সিএনজি এবং বৈদ্যুতিন গাড়ির জন্য। নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ রাখা হচ্ছে দিল্লিতে। সুপ্রিম কোর্ট সোমবার নির্দেশ দিয়েছে, আদালতকে না জানিয়ে চতুর্থ স্তরের এই নিয়ন্ত্রণবিধি শিথিল করা যাবে না।