শারীরবৃত্তীয় নানা পরিবর্তনের কারণেই হবু মায়েদের ওজন সহজে নিয়ন্ত্রণে আসতে চায় না। ছবি: সংগৃহীত।
সন্তানধারণের সময়ে যেমন হবু মায়েদের ওজন বেড়ে যায়, তেমন প্রসব-পরবর্তী কালে শরীরে মেদের আধিক্য ঘটে। শারীরবৃত্তীয় নানা পরিবর্তনের কারণেই সহজে ওজন নিয়ন্ত্রণে আসতে চায় না। শরীরচর্চা করার মতো ক্ষমতাও থাকে না নতুন মায়েদের। পরিমিত ক্যালোরি গ্রহণ করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু এই সময়ে সদ্যোজাতটিকে স্তন্যপান করাতে হয় বলে কড়া ডায়েট মেনেও চলা যায় না।
‘পাবমেড সেন্ট্রাল’ জার্নালের ‘ক্লিনিক্যাল মেডিসিন’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সন্তান প্রসব করার পরে নতুন মায়েদের ওজন বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। যেমন সন্তানের দেখাশোনা করতে গিয়ে প্রায় রাতই জেগে কাটাতে হয়। ঘুম না হলে বিপাকক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। ফলে ওজন বাড়তে পারে। আবার নতুন মা হওয়ার দায়িত্ব থেকে অনেকেরই মানসিক চাপ, অবসাদ বেড়ে যায়। সে কারণেও নতুন মায়েরা মোটা হয়ে যেতে পারেন। তবে পুষ্টিবিদ গরিমা গোয়েল জানাচ্ছেন, সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মেয়েদের শরীর নানা ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। হরমোনের হেরফেরে ওজন বেড়ে যায় দ্রুত। তবে বিপাকহার উন্নত করার জন্য বেশ কিছু পানীয় রয়েছে। চিকিৎসক কিংবা পুষ্টিবিদদের পরামর্শ মেনে নিয়মিত সেগুলি খেতে পারলে কিছুটা হলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
মেদ ঝরানোর জন্য কোন কোন পানীয়ে চুমুক দেবেন নতুন মায়েরা?
১) ঈষদুষ্ণ জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই দিনের শুরুতে এই পানীয় খান। তবে ভারী খাবার খাওয়ার পরেও এই পানীয়ে চুমুক দেওয়া যায়। ‘জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, লেবুর রসে রয়েছে 'পলিফেনল' নামক একটি উপাদন। এটি স্থূলত্ব নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
২) স্তন্যদুগ্ধের উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে নতুন মায়েদের মেথি ভেজানো জল খাওয়ানো হয়। ‘জার্নাল অফ ট্র্যাডিশনাল চাইনিজ় মেডিক্যাল সায়েন্সেস’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, প্রসব-পরবর্তী সময়ে হরমোনের সমতা রক্ষা করতে এবং বিপাকহার বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে বিশেষ এই পানীয়টি। ফলে, তা ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে।
৩) রক্তে বাড়তি শর্করার কারণে অনেক সময়ে নতুন মায়েদের ওজন বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ঘন ঘন খিদেও পায়। এই ধরনের উপসর্গ দমন করতে গেলে দারচিনি ভেজানো জলে চুমুক দেওয়া যায়। রাতে শোয়ার আগে এই পানীয় খেতে পারলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।