গলা-বুক জ্বালার কারণে ঘুমোতে পারেন না? ছবি: সংগৃহীত।
চোঁয়া ঢেকুর, গলা-বুক জ্বালা— পেটরোগা বাঙালির সারা বছরই হজমের সমস্যা!
এ নিয়ে আর কত জন মাথা ঘামান? কিন্তু এই সমস্যা যখন রাতের ঘুম কেড়ে নেয়, তখন চিন্তা হয় বইকি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়িজ়’ বা ‘জিইআরডি’ বলা হয়। স্বাস্থ্যসচেতনেরা অবশ্য একে ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ নামেও চেনেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, যখন পাকস্থলীর খাদ্যবস্তু মুখগহ্বর এবং পাকস্থলীর সংযোগকারী খাদ্যনালির মধ্য দিয়ে উল্টো দিকে প্রবাহিত হয়, তখনই এই সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে পুরো খাদ্যনালি জুড়ে জ্বালার অনুভূতি হয়। এই অংশের পেশির বলয়কে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘লোয়ার ইসোফেজিয়াল স্ফিঙ্কটার’ বা ‘এলইএস’ বলা হয়। এই অংশটি অন্য সময়ে বন্ধ থাকে। শুধুমাত্র খাদ্যবস্তু গলাধঃকরণের সময়ে তা শিথিল হয় এবং খুলে যায়। ফলে খাবার প্রবেশ করতে পারে খাদ্যনালিতে।
কিন্তু ‘জিইআরডি’ আক্রান্তদের ক্ষেত্রে বিষয়টা অন্য রকম। খাবার খাওয়ার সময় ছাড়াও শোয়ার সময়ে ‘স্ফিঙ্কটার’ পেশিটি আলগা হয়ে যায়। ফলে পাকস্থলীর মধ্যস্থিত খাদ্যবস্তু ও পাচকরস খাদ্যনালির উপরের দিকে উঠে আসতে শুরু করে। রাতের খাবার খাওয়ার পর শারীরিক সক্রিয়তাও কমে আসে। ফলে সহজে খাবার হজমও হয় না। ঘুমের সময়ে নানা রকম অস্বস্তি হয়, নিরবচ্ছিন্ন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।
এমন সমস্যা যদি রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়, তা হলে কী করবেন?
১) যে দিকে মাথা দিয়ে শোবেন, সেই অংশটি বালিশ দিয়ে একটু উঁচু করে রাখতে হবে। প্রয়োজনে দু’টি বালিশ একসঙ্গে রাখা যেতে পারে।
২) হজমের গোলমাল থাকলেও রাতে খুব বেশি কিংবা তেলমশলা দেওয়া ভারী খাবার খাওয়া যাবে না। রাতের খাবার খাওয়ার সময়ও এগিয়ে আনতে পারলে ভাল হয়।
৩) অনেকেই বলেন, বাঁ পাশ ফিরে ঘুমোলে এই ধরনের সমস্যা খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসে। এই টোটকাও প্রয়োগ করে দেখতে পারেন। এই সব টোটকায় একান্তই কাজ না হলে ওষুধ তো রয়েছেই।