শিশুর জন্মের পরে চারপাশের অনেক কিছুই বদলে যায়। প্রতীকী ছবি।
‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবনের এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সমস্ত ছুতমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই লোকে কী বলবে-এর এক একটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই, আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।‘লোকে কী বলবে’-র লাইভ অনুষ্ঠানে এক জন সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মানসিক অবসাদ কাটিয়ে ওঠার উপায় জানতে চেয়েছিলেন। ইংরেজিতে এই সমস্যাকে বলে ‘পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন’। শিশুর জন্মের পরে চারপাশের অনেক কিছুই বদলে যায়। মায়েদের জীবন একেবারেই সন্তানকেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। এত বদলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চাপ অনেক ক্ষেত্রে ডেকে আনে অবসাদ।
সন্তানের জন্মের পরে ক্লান্তি অনেকের মধ্যেই আসে। কিন্তু তা যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে, তবে ভেবে দেখা প্রয়োজন। এই অবসাদের উপসর্গ একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম। কারও খিদের বোধ কমে যায়, কারও আবার দ্রুত ওজন কমতে থাকে। সর্ব ক্ষণ মনখারাপ, ঘুম না আসা, বিনা কারণেই অপরাধবোধ এবং বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হতে পারে। এই সমস্যা নিয়ে মনোবিদ বলেন, ‘‘অনেক সময় প্রস্তুতিহীন মাতৃত্বের ক্ষেত্রে অবসাদ তীব্র ভাবে হানা দেয়। শরীরে একটা বদল চলে আসে। হঠাৎ করেই কিছু নতুন দায়িত্ব তৈরি হয়ে যায়। এর ফলে কিন্তু সন্তানের প্রতিও একটা বিরক্তি চলে আসতে পারে। ক্লান্তি আসতে পারে। সব সময় একই রকম ভাল না-ও লাগতে পারে। তবে তার মানে এই নয় যে, মা তাঁর সন্তানকে ভালবাসছেন না। অনেক মহিলাই আছেন যাঁরা এই ধরনের অবসাদে ভুগছেন, সেটা মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেন না। ভিতরে ভিতরে গুমরে মরেন। অনেক সময় নিজেও বিশ্বাস করতে পারেন না। কিন্ত এমন পরিস্থিতি সত্যিই তৈরি হতে পারে। চেপে না রেখে চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া জরুরি। এর কিছু থেরাপিও আছে। উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে এই অবসাদ থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।’’