ক্যালশিয়াম ওষুধের পরিপূরক খাবার। ছবি: সংগৃহীত।
এখন আর পা, কোমরের যন্ত্রণা শুরু হতে বয়সের অপেক্ষা করতে হয় না। একটু বেশি হাঁটাহাঁটি করলে, কায়িক পরিশ্রম করলেই পায়ের যন্ত্রণা শুরু হয়। সব ব্যথা যে আর্থ্রাইটিস বা বাত, তা নয়। তবে শরীরে ক্যালশিয়ামের অভাব হলে যে কোনও বয়সেই হাড়ের সমস্যা হতে পারে। তাই হাড়ের গঠন, ঘনত্ব ঠিক রাখতে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি থাকা চলবে না। পাশাপাশি, হাড় মজবুত রাখতে ভিটামিন এ, কে, ই, এবং ডি-এর মতো উপাদানগুলিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই হাড়ের কোনও সমস্যা হলেই ক্যালশিয়ামের ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তবে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কিন্তু ক্যালশিয়ামের ওষুধকে খুব একটা সমর্থন করে না। বরং চিকিৎসকেরা বলেন, বেশি ওষুধ খেলে তা কিডনিতে গিয়ে জমা হয়। দীর্ঘ দিন জমতে জমতে তা পাথরে পরিণত হয়। তাই হাড়ের সমস্যা রুখতে ওষুধ নয়, পাতে থাকুক ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার।
কোন কোন খাবারে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ বেশি?
১) দুগ্ধজাত খাবার:
ক্যালশিয়ামের অন্যতম উৎস হল দুধ। এক কাপ মাঠাযুক্ত দুধে প্রায় ২৭০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম পাওয়া যায়। সঙ্গে উপরি পাওনা ভিটামিন ডি এবং এ। সয়াবিন থেকে যে দুধ পাওয়া যায়, সেই এক কাপ দুধে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম। যাঁদের দুধ হজম করতে সমস্যা হয় তাঁরা সয়া মিল্ক, আমন্ড মিল্ক বা নারকেলের দুধ খেতে পারেন। দুধ একেবারেই সহ্য না হলে দই খাওয়া যেতে পারে। দইয়ের মধ্যে রয়েছে ল্যাক্টোব্যাসিলাস। তাই দই খেলে পেটের সমস্যা হয় না।
২) শাকপাতা:
পালং শাক, সর্ষে শাক, নটেশাক এবং কালের মতো শাকপাতাও ক্যালশিয়ামের উৎস। এ ছাড়া এই সমস্ত শাকে রয়েছে ভিটামিন কে, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবার। হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে নিয়মিত এই শাক পাতে রাখতে হবে।
৩) তিল:
তিলের মধ্যেও যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালশিয়াম রয়েছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, নিয়মিত যদি ১ টেবিল চামচ তিলের বীজ খাওয়া যায়, তা হলেই শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালশিয়াম পৌঁছে যায়। ক্যালশিয়াম ছাড়াও তিলের মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং জ়িঙ্কের মতো খনিজ।
৪) কাঠবাদাম:
অল্প খিদের জন্য স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স হল কাঠবাদাম। তা ছাড়াও ক্যালশিয়ামের প্রাকৃতিক উৎস হল এই বাদাম। তা ছাড়া কাঠবাদাম ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন ই এবং প্রোটিনের চাহিদাও পূরণ করতে পারে।
৫) ডাল:
নানা ধরনের ডাল— যেমন রাজমা, সয়াবিন, ছোলা, মুগ, মটর, মুসুর ক্যালশিয়ামের খুব ভাল উৎস। এক কাপ রান্না করা মুগ ডালে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ প্রায় ২৭০ মিলিগ্রাম। তাই অন্যান্য খাবারের সঙ্গে রোজকার পাতে ডাল রাখা জরুরি।