Cryptic Pregnancy

অন্তঃসত্ত্বা হয়েও মাসের পর মাস টের পাননি মা! এ কী করে সম্ভব, বিজ্ঞান কী বলছে?

সন্তানধারণের পর কয়েক মাস কেটে গেল। কিন্তু মা টেরই পেলেন না যে তিনি গর্ভবতী! এমন ঘটনা বিরল হলেও অসম্ভব নয়। চিকিৎসা পরিভাষায় এই ধরনের গর্ভাবস্থাকে ‘ক্রিপ্টিক প্রেগনেন্সি’ বলা হয়।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৬
নতুন জীবন সৃষ্টি করার মধ্যে দিয়েই জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়।

নতুন জীবন সৃষ্টি করার মধ্যে দিয়েই জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়। ছবি : সংগৃহীত

মা হওয়া এক বিশেষ অনুভূতি। অনেকেই মনে করেন, নতুন জীবন সৃষ্টি করার মধ্যে দিয়েই জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এক এক জনের শরীরে এক এক রকম পরিবর্তন আসে। তা নিয়ে সতর্কও হন। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বা হয়েও সে কথা মাসের পর মাস বুঝলেন না, এমনও কি হতে পারে? এমন ঘটনা বিরল হলেও অবাস্তব নয়।

Advertisement

সাম্প্রতিক দু’টি ঘটনা সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা বিশ্বে। ২৩ বছর বয়সি আমেরিকার এক শিক্ষিকা, সন্তান জন্মের মাত্র দু’দিন আগে টের পেয়েছিলেন যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা। আবার অন্য একটি ঘটনায় ২২ বছর বয়সি এক তরুণী জানিয়েছেন, পেটে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ঘুম ভেঙেছিল তাঁর। ভেবেছিলেন ঋতুস্রাবের ব্যথা। মায়ের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথার ওষুধও খান। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর বাড়ির শৌচালয়ে সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন। এর পরেই অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। হবু মায়ের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসার কথা বলেই শোনা যায়। সে সব লক্ষণ দেখে প্রথম দিকেই মেয়েরা টের পান যে, তিনি সন্তানধারণ করেছেন। এই দুই ক্ষেত্রে অন্য রকম হল কী ভাবে?

চিকিৎসকদের মতে, এমন ঘটনা বিরল হলেও অসম্ভব নয়। চিকিৎসা পরিভাষায় এই ধরনের গর্ভাবস্থাকে ‘ক্রিপ্টিক প্রেগনেন্সি’ বলা হয়।

গর্ভাবস্থা ঘিরে এমন রহস্যময়তার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন সন্তান ধারণ করার কিছু দিন পর থেকেই সাধারণত যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়, এ ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কয়েক মাস ঋতু বন্ধ থাকার পরও অনেকে বুঝতেই পারেননি। কারণ, পলিসিস্টিক ওভারি বা জরায়ুতে টিউমার থাকলে অনেক সময়েই ঋতুস্রাব নিয়মিত হয় না। তাই সন্তানধারণের পর ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ায় তা আর আলাদা করে বুঝতে পারেননি তিনি। এমন সব ক্ষেত্রে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে  অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়েদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়।

সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে  অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়েদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। ছবি : সংগৃহীত

এ ক্ষেত্রে সন্তানধারণের পরও কি চেহারায় কোনও পরিবর্তন হয় না?

গর্ভে থাকা ভ্রূণের আকার এবং আয়তনে পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের উদরও স্ফীত হতে শুরু করে। সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু স্থূল চেহারার মায়েদের বাইরে থেকে দেখলে বোঝা মুশকিল।

ভ্রূণের গতিবিধি বোঝা যায় কি?

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ‘ক্রিপ্টিক প্রেগনেন্সি’-র ক্ষেত্রে ভ্রূণের কোনও অস্তিত্বই মায়েরা টের পাননি। বিশেষ করে যাঁদের মা হওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তাঁরা একেবারেই আন্দাজ করতে পারেননি।

‘ক্রিপ্টিক প্রেগনেন্সি’ কোনও জটিলতা সৃষ্টি করে কি?

এমন পরিস্থিতি গর্ভস্থ ভ্রূণ এবং মা, দু’জনের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে। সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়েদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। খাওয়াদাওয়া থেকে জীবনযাপন, সবেতেই আমূল পরিবর্তন আনতে হয়। শারীরিক ভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি এত বড় একটি দায়িত্ব সামলানোর জন্য মানসিক প্রস্তুতিরও প্রয়োজন হয়। কিন্তু সন্তান আসার খবরে যদি মা মানসিক ভাবে আঘাত পান, তা হলে মায়ের পাশাপাশি গর্ভস্থ সন্তানেরও ক্ষতি হতে পারে।

আরও পড়ুন
Advertisement