ছবি: প্রতীকী
মেয়েকে স্কুলে দিতে গিয়ে নানা কথাই কানে আসে রুচিরার। বয়ঃসন্ধি ছুঁইছুঁই মেয়ের বন্ধুর মায়েরা নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। মেয়ের ক্লাসের অন্যদের ঋতুস্রাব শুরু হলেও উর্জানি এখনও সেই পথে পা দেয়নি। কিন্তু জীবনবিজ্ঞানে এ বিষয়ে পড়াশোনা করেছে। স্কুলে জীবনশৈলীর পাঠও দেওয়া হয় মাঝেমধ্যেই। টেলিভিশনে স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিজ্ঞাপন দেখে লজ্জাও পায়। কিন্তু ঋতুস্রাব নিয়ে সরাসরি কথা বলতে আড়ষ্ট বোধ করে।
এখনই ঋতুস্রাব শুরু না হলেও দিন যে খুব কাছে, সে কথা জানেন রুচিরা। তাই অনেকেই পরামর্শ দেন আগে থেকে একটু একটু করে মেয়ের সঙ্গে এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে। রুচিরাও বহু বার ভেবেছেন কথা বলবেন। কিন্তু সাত-পাঁচ ভেবে আবার পিছিয়ে এসেছেন। কী ভাবে শুরু করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। মনোবিদেরা বলছেন, এই বিষয়ে কথা বলতে আড়ষ্ট বোধ করেন অনেকেই। কিন্তু একটা বয়সের পর শরীরে কী কী পরিবর্তন আসতে পারে, সে সম্পর্কে জানিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
সন্তানের সঙ্গে কী ভাবে শুরু করবেন ঋতুস্রাব নিয়ে আলোচনা?
১) খোলা মনে কথা বলুন
প্রথম বার এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে এই বয়সি মেয়েদের মনে ভয়, উদ্বেগ কাজ করতেই পারে। এই বিষয়ে মেয়েকে অভয় দেওয়াই অভিভাবকদের প্রাথমিক কাজ। প্রয়োজনে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরতে পারেন। তাতে কথা শুরু করা অনেকটা সহজ হবে।
২) ঋতুস্রাব নিয়ে কথা বলুন
নারী এবং পুরুষের শারীরিক গঠন কোথায় আলাদা, সে বিষয়টি আগে বুঝিয়ে দিন। নারী শরীর কী ভাবে পূর্ণতা পায়, সেই বিষয়েও জানিয়ে রাখা জরুরি। পাশাপাশি, বয়ঃসন্ধি, যৌনতা, প্রজনন এবং সে সঙ্গে হরমোনের প্রকারভেদ, পরিবর্তন সম্পর্কেও আগে থেকে জানিয়ে রাখা জরুরি।
৩) বয়স বুঝে কথা বলুন
বলতে হবে বলে এক দিনে সব কথা না বলে দেওয়াই ভাল। কথা বলার সময়ে বয়সের কথা মাথায় রাখতে হবে। কোন বয়সে কতটুকু বোঝার ক্ষমতা আপনার মেয়ের তৈরি হয়েছে, তা অভিভাবক হিসাবে আপনাকেই বুঝতে হবে।
৪) সব জানাবেন, কিন্তু ধৈর্য নিয়ে
ঋতুস্রাব নিয়ে সাধারণ ভাবে কথাবার্তা বলুন। কিন্তু কোনও ভাবেই তাড়াহুড়ো করবেন না। শুধু ঋতুস্রাব নয়, তার আগে বা পরে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে সেই সব নিয়েও আলোচনা করুন।
৫) অন্যান্য সুবিধা-অসুবিধাও জানিয়ে রাখুন
ঋতুস্রাব হলে মাসের ওই ক’টা দিন শারীরিক অস্বস্তি হওয়া স্বাভাবিক। তবে এই পরিস্থিতিতেও যে মেয়েরা ঘরে-বাইরে সব কাজ করেন, সেই উদাহরণও প্রকাশ্যে আনুন। শারীরিক ভাবে তো বটেই, নতুন এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাকে মানসিক ভাবেও প্রস্তুত করে তুলুন।